আলি আকবর খান-কে

কান্দিরপাড়,
কুমিল্লা
23 June, 1921
(বিকেল বেলা)

বাবা শ্বশুর!

আপনাদের এই অসুর জামাই পশুর মতন ব্যবহার করে এসে যা কিছু কসুর করেছে, তা ক্ষমা কোরো সকলে, অবশ্য যদি আমার ক্ষমা চাওয়ার অধিকার থাকে।৩ এইটুকু মনে রাখবেন, আমার অন্তর-দেবতা নেহায়েত অসহ্য না হয়ে পড়লে আমি কখনো কাউকে ব্যথা দিই না। যদিও ঘা খেয়ে খেয়ে আমার হৃদয়টাতে ঘা-টা বুঁজে গেছে, তবু সেটার অন্তরতম প্রদেশটা এখনও শিরীষ ফুলের পরাগের মতোই কোমল আছে সেখানে খোঁচা লাগলে আর আমি থাকতে পারিনে। তা ছাড়া, আমিও আপনাদেরই পাঁচজনের মতন মানুষ, আমার গণ্ডারের চামড়া নয়, কেবল সহ্যগুণটা কিছু বেশি। আমার মান-অপমান সম্বন্ধে কাণ্ডজ্ঞান ছিল না বা ‘কেয়ার’ করিনি বলে আমি কখনও এতবড়ো অপমান সহ্য করিনি। যাতে আমার ‘ম্যানলিনেসে’ বা পৌরুষে গিয়ে বাজে – যাতে আমাকে কেউ কাপুরুষ হীন ভাবতে পারে। আমি সাধ করে পথের ভিখারি সেজেছি বলে লোকের পদাঘাত সইবার মতন ‘ক্ষুদ্র-আত্মা’ অমানুষ হয়ে যাইনি। আপনজনের কাছ হতে পাওয়া অপ্রত্যাশিত এত হীন ঘৃণা, অবহেলা আমার বুক ভেঙে দিয়েছে। বাবা! আমি মানুষের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি। দোওয়া করবেন, আমার এ ভুল যেন দুদিনেই ভেঙে যায় – এ অভিমান যেন চোখের জলে ভেসে যায়!

বাকি উৎসবের জন্য যত শিগগির পারি বন্দোবস্ত করব৪। বাড়ির সকলকে দস্তুর মতো সালাম-দোওয়া জানাবেন। অন্যান্য যাদের কথা রাখতে পারিনি, তাদের ক্ষমা করতে বলবেন। তাকেও ক্ষমা করতে বলবেন, যদি এ ক্ষমা চাওয়া ধৃষ্টতা না হয়! আরজ – ইতি

                  চিরসত্য স্নেহসিক্ত –

                        নুরু