হবীবুল্লাহ বাহার-কে

সওগাত
১১ নং ওয়েলেসলি স্ট্রিট, কলিকাতা


11, Wellesley Street
Calcutta
8.2.29

The Saogat
Illustrated Weekly
Illustrated Monthly
Illustrated Annual

স্নেহাস্পদেষু
    তোমাদের ওখান থেকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছেছি। আমার যাত্রার ক্ষণটা হয়তো অত্যধিক ভালো ছিল তাই রাস্তায় – অন্তত আমার কেবিনে একেবারে লা-শরিক হয়ে আসতে পেরেছি। অত কোলাহলের পর ওই নির্জনতাটুকু হলাহলপান-তিক্ত কণ্ঠে অমৃতের মতো মিষ্টি লেগেছিল। বাড়িতে মেয়েদের ও বন্ধুদের মন ছাড়া আর সবই ফর্সা ও হালকা দেখলাম। মেঘ না কাটতেই আবার আজ ঠাকুরগাঁও যাত্রা করছি। অবশ্য, বাড়ির চেরাপুঞ্জি আমার সয়ে গেছে। আমার মনের চেরাপুঞ্জিও ওদের সয়ে গেছে।
    তোমাদের বাড়িটা এতদিনে হয়তো একটু নিশ্বাস ফেলে বেঁচেছে। ঝড় হয়তো সুন্দর, কিন্তু সে ঝড় যদি মাসাবধি কাল ধরে বইতে থাকে, তা হলে সেটা সকলের পক্ষেই উৎপাত হয়ে দাঁড়ায়। তোমাদের বাড়ির টিনগুলো ফুটো হয়ে গেছে কিনা আমাদের চিৎকারে, পরখ করে দেখে আসতে ভুলে গেছি। তোমাদের বোধ হয় এ বৎসর আবার মিস্ত্রি লাগাতে হবে। অবশ্য বৃষ্টি যদি ঝরেই তবে ও ওপরের ফুটো দিয়ে ঝরবে না, ঝরবে নানি-আম্মার চোখের মেঘলা আকাশ থেকে। যাক, তবু একটা দুর্গ জয় করা গেল – এই পরাজিত জীবনেও! সময় খুব কম। সময়েরই বা অপরাধ কী? ওকে কেবলই কম করে চলেছি। অত বড়ো বিপুল দেহকে ওর কেটেকুটে নাস্তানাবুদ করে ফেললাম
    কবিতাগুলো কি আজও কপি হল না? ও আর হবেও না তোমাকে দিয়ে। তুমি বড্ড দীর্ঘসূত্রী! আমার আসলগুলোই পাঠিয়ে দাও। ওগুলো নিয়ে নানান কাগজে ভাগ বাঁটোয়ারা করে দিতে হবে। বললে, ‘গিয়েই পাবেন’। কিন্তু পেলাম না যখন, তখন হয়তো আমিই আসিনি। কিন্তু সেটা বিশ্বাস করবার মতো বিশ্বাস আমার নেই।
    আজই পাঠিয়ে দাও সমস্ত কবিতাগুলো। ওগুলোর কোনো অর্থ আছে কিনা জানিনে, কিন্তু ওগুলো থাকলে হয়তো বেশ অর্থ পেতাম এখন।
    সব বিষয়ে যদি এইরকম
careless হও তোমায় দিয়ে কোন কাজ হবে তবে?
    আজই পাঠিয়ে দেবে মনে করে। আশা করি রাগবে না। পেনসিলের কালি, একটু ঘসা দিলেই মুছে যাবে।
    নানি-আম্মা, আম্মা প্রভৃতিকে সালাম দেবে। তুমি, নাহার, সলিম, মহী & Company আমার স্নেহাশিস নাও।
সোহরাবকে চুমু দিয়ো। ইতি।