জনাব এম সেরাজুল হক-কে


কলিকাতা
৩০ আশ্বিন, ১৩৩৯
জনাব সম্পাদক সাহেব,

আপনারা আমাকে অনাগতের আগমনি গাইতে আমন্ত্রণ করেছেন; আমি অযোগ্য, তবুও আহ্বান করেছেন। সেজন্য মুবারকবাদ জানাচ্ছি।

বিশ্ব জুড়ে আজ মহাজাগরণ। শিক্ষা ধর্মের নব নব স্ফুরণ। অভ্যুত্থানের বজ্রবিষাণ দিকে দিকে প্রতিধ্বনিত। বিশ্বব্যাপী মহাজাগরণের এই প্রদীপ্ত প্রভাতে বাংলার মুসলিম তরুণেরা কি মোহ-নিদ্রায় মোহাচ্ছন্ন হয়েই থাকবে? ধর্ম অধর্মের অন্ধ-বিশ্বাস ও কুসংস্কারের মহাসংঘর্ষের এই মহাসন্ধিক্ষণে তৌহিদের শান্তি-সাম্য-ঐক্য-মন্ত্রে সে কি ক্লান্ত-শ্রান্ত-ভ্রান্ত মানব-চিত্তের অবসন্নতা বিদূরিত করবে না? জাতি ও কওমকে ধর্মপথে – সেরাতোল মুস্তাকীমে – পরিচালিত, সংঘবদ্ধ করতে প্রয়াস পাবে না? তরুণ বন্ধুরা কি মহা-কোরানের মহাবাণী ‘কুম বে-ইজনিল্লাহ” – ওঠো জাগো, এ বাণী ভুলে গিয়েছে? আমি তো দিব্য-চোখে দেখতে পাচ্ছি ওই স্বর্গের দুয়ারে দাঁড়িয়ে আমাদের কীর্তিমান পূর্বপুরুষগণ আকুল প্রাণে আমাদের কর্মের দিকে চেয়ে রয়েছেন। তরুণদের মন-মন্দিরে তৌহিদের রুদ্রানল প্রজ্বলিত ইউক। বাবর, হুমায়ুন, শাহজাহান, সালাউদ্দীন, খালিদ, তারিক, মুসা, হাঞ্জেলা, ওকবার সাধনা তাদের কর্মে রূপলাভ করুক। শিক্ষা, কুশিক্ষা, বিদ্বেষ, রপরশ্রীকাতরতা, পরবশ্যতার প্রাচীন প্রাচীর চূর্ণ করে বাংলার মুসলিম তরুণেরা জ্ঞান, চরিত্র, নীতি, সখ্য ও মনুষ্যত্বের পথে কাতার বন্দি হউক – এই আশা অন্তরে পোষণ করেই আপনাদের নির্ধারিত দিনে আমন্ত্রণ গ্রহণ করছি। আপনাদের চেষ্টায় যুবকেরা নবজিন্দেগির পথে অগ্রসর হোক – সকলের সাধনার জয়যাত্রা সাফল্য লাভ করুক, এই কামনা।

নজরুল ইসলাম