পূবের হওয়া
কাব্যগ্রন্থ
কাজী নজরুল ইসলাম
আশা
মহান তুমি প্রিয়!
এই কথাটির গৌরবে মোর চিত্ত ভ'রে দিয়ো॥
অনেক আশায় ব'সে আছি যাত্রা-শেষের পর
তোমায় নিয়েই পথের 'পারে বাঁধব আমার ঘর-
হে চির-সুন্দর!
পথশেষে সেই তোমায় যেন করতে পারি ক্ষমা,
হে মোর কলঙ্কিনী প্রিয়তমা!
সেদিন যেন বলতে পারি,- 'এসো এসো প্রিয়,
বক্ষে এসো, এসো আমার পূত কমনীয়॥'
হায় হারানো লক্ষ্মী আমার! পথ ভুলেছ ব'লে
চির-সাথি যাবে তোমার মুখ ফিরিয়ে চলে?
জান্ ওঠে হায় মোচড় খেয়ে, চলতে পড়ি ট'লে
অনেক জ্বালায় জ্বলে' প্রিয় অনেক ব্যথায় গলে'!
বারেবারে নানান রূপে ছ'লতে আমায় শেষে,
কলঙ্কিনী! হাতছানি দাও সকল পথে এসে,
কুটিল হাসি হেসে?
ব্যথায় আরো ব্যথা হানাই যে সে!
তুমি কি চাও তোমার মতোই কলঙ্কী হই আমি?
এখন তুমি সুদূর হ'তে আসবে ঘরে নামি'।
হে মোর প্রিয়, হে মোর বিপথগামী!
পথের আজো অনেক বাকী,
তাই যদি হয় প্রিয়-
পথের শেষে তোমায় পাওয়ার যোগ্য করেই নিয়ো॥
রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে
কিছু জানা যায় না।
গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল
সওগাত
পত্রিকার 'পৌষ ১৩২৭
(ডিসেম্বর ১৯২০-জানুয়ার ১৯২১) সংখ্যায় শিরোনাম
ছিল কলঙ্কী প্রিয় (বাউলের সুর)। পরে
পূবের
হাওয়া'র প্রথম সংস্করণ (জানুয়ারি ১৯২৬, ১৩৩২ বঙ্গাব্দ) অন্তর্ভুক্ত
হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। ধারণা করা হয়
গানটি নজরুল অগ্রহায়ণ মাসে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২১ বৎসর ৬ মাস।