পূবের হওয়া
কাব্যগ্রন্থ
কাজী নজরুল ইসলাম


                      ফুল-কুঁড়ি
আর পারিনে সাধতে লো সই এক ফোঁটা এই ছুঁড়িকে।
ফুটবে না যে ফোটাবে কে বলল সে ফুল-কুঁড়িকে॥

            ঘোমটা-চাঁপা পারুল-কলি,
            বৃথাই তারে সাধল অলি,
পাশ দিয়ে হায় শ্বাস ফেলে যায় হুতাশ বাতাস ঢলি।

                    আ মলো ছিঃ!     ওর হল কী?
            সুতোর গুঁতো শ্রান্ত-শিথিল টানতে ও মন-ঘুড়িকে।
                    আর শুনেছিস সই?
ওলো হিমের চুমু হার মেনেছে এইটুকু আইবুড়িকে!!

            সন্ধে সকাল ছুঁয়ে কপাল রবির যাওয়া-আসাই সার,
            ব্যর্থ হল পথিক-কবির গভীর ভালোবাসার হার।
                        জল ঢেলে যায় জংলা বধু,
                        মৌমাছি দেয় কমলা মধু,
            শরম-চাদর খুলবে না সে আদর শুধু শুধু।
            কে জানে বোন         পথ-ভোলা কোন্
তরুণ-চোখের করুণ-চাওয়ায় চোখ ঠেরেছে ছুঁড়িকে –
                        বসে আছে লো
এই লজ্জাবতীর বধির বুকের সিংহ-আসন জুড়ি কে?