বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: ওলো বিশাখা, ওলো ললিতে
ওলো বিশাখা, ওলো ললিতে, দে
এই পথের ধূলি দে।
যে পথে শ্যামের রথ চ'লে
গেছে, দে সেই পথের ধূলি দে॥
আখর: [ধূলি নয় ধূলি নয়, এ যে হরি-চন্দন ধূলি নয়,
এ যে হরি-চন্দন, অঙ্গ শীতল
করা।
ওর ভাগ্য ভালো, রাধার চেয়ে
ওর ভাগ্য ভালো ─
ঐ, ধূলি মাথায় তুলে দে
লো।]
ঐ পথের বুকে গেছে কৃষ্ণের
রথ, সখী আমি কেন হই নাই ঐ ধূলি-পথ।
আখর: [বধূ, চ'লে যে যেত গো আমার, হিয়অর উপর দিয়া চ'লে যে যেত
আমার, সকল জনম সফল হ'ত,
চ'লে যে যেত গো]
অনুরাগের রজ্জু দিয়া
বাঁধিতাম সে-রথে
নিয়ে যেতাম সে-রথ প্রেমপথে
(ওলো ললিতে)
আখর: [নিয়ে যেতাম, অনুরাগ-রজ্জুতে বেঁধে,
প্রেমের পথে,
অনুরাগ-রজ্জুতে বেঁধে।
- ভাবসন্ধান: কৃষ্ণের প্রবল প্রেমানুরাগে রাধা আকুল। সে প্রেম দলিত করে
কৃষ্ণ চলে গেছেন তাঁর রথে চড়ে। রাধা কৃষ্ণের চলে যাওয়া সে রথের ধূলিকে
প্রেমার্ঘ রূপে চেয়েছেন তাঁর দুই সখি- বিশাখা ও ললিতার কাছে। রাধার কাছে
কৃষ্ণের রথের স্পর্শ পাওয়া ধূলি, প্রেমাগ্নি নিবারণের শীতল হরি-চন্দনের মতো।
কৃষ্ণের সান্নিধ্য বঞ্চিতা রাধা তাঁর ভাগ্যের চেয়ে ওই ধূলির ভাগ্যকে অধিক বলে
ঈর্ষান্বিতা হয়েছে। তাই রাধা তাঁর সখিদের ওই ধূলি, তাঁর মাথায় প্রেমার্ঘ রূপে
তুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
রাধা মনে করেন তিনি পথের ধূলা হলে- তাঁর হৃদয়-রূপী পথের উপর দিয়ে তাঁর জনমকে
সফল করে- কৃষ্ণ তাঁর রথ চালিয়ে যেতেন। রাধা নিজেকে ওই রথের সাথে নিজেকে বেঁধে
রাখতেন চান অনুরাগের রজ্জু দিয়ে। যাতে তিনি সে রথের সাথে চলে যেতে পারেন
কৃষ্ণের চলে যাওয়া প্রেমপথে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে
কিছু জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ এইচএমভি রেকর্ড
কোম্পানি রত্নেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে 'ওলো বিশাখা, ওলো ললিতে' গানটি
রেকর্ড করেছিল। পরে রেকর্ডটি বাতিল হয়ে যায়। এই রেকর্ডটি করার সুনির্দিষ্ট
মাসের উল্লেখ নেই। তাই গানটিকে নজরুলে ৪০-৪১ বৎসরের রচনা হিসেবে উল্লেখ করা
হলো।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ,[নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮।
ফেব্রুয়ারি ২০১২। সংখ্যা ১৩২১। পৃষ্ঠা: ৪০০]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধরম। বৈষ্ণব। রাধাকৃষ্ণ।
প্রণয়