বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: চাঁদের নেশা লেগে ঢুলে নিশীথিনী
চাঁদের নেশা লেগে ঢুলে নিশীথিনী।
মদির হাওয়ার তালে নাচন লাগে ডালে ডালে
─
ঝিল্লি নূপুর পরি' পায় নাচে কানন বিহারিণী॥
নেশার ঘোর লাগে বনে পাপিয়া জাগে
'চোখ গেল চোখ গেল' গেওয় ওঠে গুল-বাগে,
একেলা বাতায়নে হায় জাগে বিরহিণী॥
মহুয়া বকুল ফুলে মদির সুবাস ঘনায়,
চাঁদের ওই মুখ মদের ছিটে লাগে কনক চাঁপায়।
শান্ত হৃদয় মম দুলিছে সাগর সম,
এমন রাতে সে কোথায় আমি যার অনুরাগিণী॥
- ভাবার্থ: এই
গানে মূলত চাঁদনী রাতের মোহনীয় রূপকে কল্প-বাস্তবের রূপকল্পে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সেই সাথে প্রকৃতি নানাবিধ উপকরণ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে কোনো এক বিরহণীর
সঙ্গলাভের প্রত্যাশা।
কবি তার কল্পলোকে অনুভব করেন- জ্যোৎস্নার মোহনীয় সৌন্দর্য মোহিত নেশায় রাত্রি
যেনো নেশগ্রস্থের মতো ঢুলে পড়ে। সাথে মদির হাওয়ার ছন্দে নৃত্যের দোলা লাগে
গাছের শাখায় শাখায়। এমন মধুময় রাতে বনভূমিতে বিচরণকারী সঙ্গপিয়াসী ঝিল্লি। যেন
কাননের পায়ে নৃত্যের ছন্দে ছন্দে. ঝিলির ধ্বনি নুপূর হয়ে বাজে।
চাঁদের মোহনীয় আলোয় নেশার ঘোর জাগে বনপাপিয়া। 'চোখ গেল চোখ গেল' বলে গেয়ে ওঠে
গুল -বাগে। শুধু কোন এক বিরহিণী একাকী বাতায়নে পাশে বসে থাকে প্রিয়জনের
সঙ্গলাভের প্রত্যাশায়।
চাঁদনী রাতের নেশা ধরানো আলোয় মদির সুবাস-ঘন মহুয়া, বকুল, কনক চাঁপায়
ছোঁওয়া লাগে সে নেশার। কবির মনেও জাগে অনুরাগের ছোঁওয়া। তাই তার প্রশান্ত হৃদয়
দুলে ওঠে তরঙ্গায়িত সাগরের মতো। কবি দিশাহারা হয়ে এমন মোহনীয় রাতে তাঁর
প্রেয়সীর অন্বেষণ করে মোহগ্রস্থের মতো বলে ওঠেন- 'সে কোথায় আমি যার অনুরাগিণী'।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪১)
মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড
প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের
বয়স ছিল ৩৪ বৎসর ১১
মাস।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। ১৩৮৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা:
৭৩৩]
- রেকর্ড:
-
এইচএমভি [মে ১৯৩৪ (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪১)। এন ৭২২৬। শিল্পী: মিস অনিমা বাদল]
-
৭ আগষ্ট ১৯৩৪ (মঙ্গলবার ২২ শ্রাবণ ১৩৪২)
এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির সাথে নজরুলের একটি
চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিপত্রে গানটির উল্লেখ আছে।
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, জাগতিক, চাঁদ