জাগো জাগো, পোহাল রাতি।
গগন-আঙনে ম্লান চাঁদের বাতি॥
মধুমাছি মধু বোলে
ফুলমুখী ঘুম ভোলে,
শরমে নয়ন খোলে ─ শয়ন-সাথি॥
সলিল লুটায় ঘটে
বধূর বুকে তটে,
বাজে বাঁশি ছায়া-বটে ─ আবেশ মাতি'॥
- ভাবার্থ: প্রভাতের আগমনী গানের আদলে- এই গানে উপস্থাপিত করা হয়েছে ভোরের অপরূপ প্রাকৃতি সৌন্দর্যকে। ভোরের এই স্নিগ্ধরূপ সন্দর্শনে মুগ্ধ কবি সবাইকে ডেকে বলছেন- রাত শেষে ভোর এসেছে, এবার সবাই ঘুম থেকে জেগে ওঠো। দেখো ভোরের আঙিনাতে ম্লান চাঁদের নিস্প্রভ বাতি। মৌমাছিদের মধুর গুঞ্জনে ফুলগুলো ঘুম ভেঙে জেগে উঠেছে। আর রাতের শয্যাসঙ্গিনী সলজজ্জ নয়ন মেলেছে। ভোরের ঘাটে নদীর ঢেউ আর বধুর মনের কূলে প্রেমের ঢেউ লুটিয়ে পড়ছে প্রণয় প্রণতিতে। তারই আবেশে ছায়াবটের তলে বাজছে ভোরের বাঁশি হয়ে বাজছে ভোরের সুর ।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ (ডিসেম্বর ১৯২৯) মাসে প্রকাশিত 'চোখের চাতক' সঙ্গীত-সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩০ বৎসর ৬ মাস।
- গ্রন্থ
- চোখের চাতক
- প্রথম সংস্করণ [অগ্রহায়ণ ১৩৩৬ (ডিসেম্বর ১৯২৯)।গান ২৭। ভৈরবী-ভূপাল-যৎ]
- নজরুল-রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ফাল্গুন ১৪১৩। ফেব্রুয়ারি ২০০৭। চোখের চাতক। গান ২৭। ভৈরবী-ভূপাল-যৎ। পৃষ্ঠা: ২১৩-২১৪।]
- পর্যায়:
- বিষবাঙ্গ: প্রকৃতি, প্রভাত