তরুণ-তমাল-বরণ এসো শ্যামল আমার।
ঘন শ্যাম তুলি বুলায়ে মেঘ-দলে এসো দুলায়ে আঁধার॥
কাঁদে নিশীথিনী তিমির কুন্তলা
আমারি মত সে উতলা,
এসো তরুণ দুরন্ত ভাঙি' হৃদয় দুয়ার॥
তপ্ত গগনে ঘনায়ে ঘন দেয়া
ফুটায়ে কদম কেয়া,
আমার নয়ন-যমুনায় এসো জাগায়ে জোয়ার॥
ভাবার্থ: এই গানে কবি বর্ষাকে তরুণ শ্যামল তমালের সৌন্দর্যকে- প্রেমিকের আসঙ্গলিপ্সার মতো করে আহ্বান করেছেন। তাঁর কামনা প্রকৃতিতে বর্ষা আসুক, ঘন শ্যামল বরণের তুলি বুলিয়ে, আঁধার দুলিয়ে। বর্ষার প্রতীক্ষায় তাঁরই মতো এই অন্ধকার রাতিও যেন তার কেশরাশি ছড়িয়ে ক্রন্দসিনী হয়ে ওঠে। কবি বর্ষাকে আহ্বান করেন, যেন সে তরুণের বেশে সকল বন্ধন ভেঙে প্রকৃতির হৃদয় দুয়ারে প্রেমিকের মতো আসে। সে যেন আসে তপ্তগগন মেঘাচ্ছন্ন করে বৃষ্টিরূপে। আসে কদমকে প্রস্ফুটিত করে। সে যেন আসে কবির হৃদয়ে শ্যামল-প্রেমের জোয়ার জাগিয়ে, মিলনের আনন্দাশ্রুতে নয়ন-যমুনাকে প্লাবিত করে।
রচনাকাল ও স্থান:
গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট
(শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪১) মাসে এইচএমভি প্রথম এই গানটির একটি রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের
বয়স ছিল ৩৫ বৎসর ২
মাস।