বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: দেশ গৌড়-বিজয়ে দেবরাজ গগনে এলো বুঝি
দেশ গৌড়-বিজয়ে দেবরাজ গগনে এলো বুঝি
সমর-সাজে।
তাহারি মেঘ-মৃদঙ্গ গুরু গুরু আষাঢ়-প্রভাতে সহসা
বাজে॥
গহন কৃষ্ণ ঐরাবত-দল
রবিরে আবরি’ ঘিরিল নভতল,
হানে খরশর বৃষ্টি ধারা জল – পবন-বেগে প্রতি
ভবন-মাঝে॥
বনে এলোকেশ বিজলি-পাশে,
বাঁধিয়া দেব্-সেনা অট্টহাসে।
শ্যামল গৌড়ের অমল হাসি
শস্যে-কুসুমে ওঠে প্রকাশি’,
অঙ্গে তাহার আঘাত-রাশি – দেব-আর্শীবাদ হয়ে বিরাজে॥
-
ভাবার্থ: দেশ গৌড় রাগে নিবদ্ধ এই গানে কবি রাগের নামটি ব্যবহার করেছেন
মাত্র। কিন্তু গানের বর্ণনায় এই রাগের পরিচয় মেলে না। গানটিতে মূলত
আষাঢ়-প্রভাতের ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ প্রকৃতিকে উপস্থাপন করা হয়েছে সনাতন হিন্দু
ধর্মের বৃষ্টির দেবতা দেবরাজ ইন্দ্রের রূপকতায়।
যেন মহা আয়োজন করে গৌড় দেশ জয় করার জন্য দেবরাজ ইন্দ্র যোদ্ধার বেশে হঠাৎ হাজির
হয়েছেন আষাঢ়ের আকাশে। সে সমর আয়োজনে গুরু গুরু মেঘ-মৃদঙ্গ বাজছে রণবাদ্য রূপে।
ইন্দ্রের ঘনকৃষ্ণ বর্ণের যোদ্ধা ঐরাবতেরা (ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ কালো মেঘরাশি),
আকাশ আবৃত করে ঘিরে ধরেছে গগনমণ্ডল। দেবসেনারা (মেঘেরা) যেন ভবন ভবনে বাতাসের
বেগে বৃষ্টির শর নিক্ষেপ করে- অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে।
শ্যামল গৌড় (বঙ্গদেশ) দেবরাজের এই বৃষ্টির শরাঘাতকে আশীর্বাদ হিসেবে গ্রহণ করেছে
অমল হাসিতে। কারণ এই শরাঘাতেই গৌড় হয়ে উঠবে শস্য ও কুসুমে তথা সম্পদ ও
সৌন্দর্যে পরিপূর্ণা।
-
রচনাকাল ও স্থান:
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে এইচএমভি
গানটির রেকর্ড করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রকাশিত হয় নি। গানটির সাথে
মাসের উল্লেখ না থাকায়, গানটি প্রকাশের সময় নজরুলের মাস-ভিত্তিক বয়স কত ছিল,
তা অনুমান করা যায় না। সাধারণভাবে বলা যায়, গানটি নজরুলের ৪২ বৎসর বয়সে রচিত হয়েছিল।।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২) -এর ১৪৯২ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৪৪৮।
-
বেণুকা। নজরুল ইন্সটিটিউট ঢাকা। আষাঢ়, ১৪১৩ বঙ্গাব্দ/ জুন, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ।[নমুনা]
- রেকর্ড: এইচএমভি [১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ (১৩৪৯ বঙ্গাব্দ)। শিল্পী নরেন চন্দ্র। রেকর্ডটি পরে বাতিল হয়ে গিয়েছিল]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
- জগৎ ঘটক।
বেণুকা।[নজরুল ইন্সটিটিউট ঢাকা। আষাঢ়, ১৪১৩ বঙ্গাব্দ/ জুন, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ।
নমুনা]
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, বর্ষা
- সুরাঙ্গ: ধ্রুপদাঙ্গ।
- গ্রহস্বর: স