বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: নাচে সুনীল দরিয়া আজি দিল্-দরিয়া
রাগ:
ভৈরবী, তাল: দাদরা
নাচে সুনীল দরিয়া আজি দিল্-দরিয়া পূর্ণিমা চাঁদেরে পেয়ে।
কূলে তার ঝুমুর ঝুমুর ঘুঙুর বাজে মিঠে আওয়াজে
নাচে জল্-পরীর মেয়ে॥
তার জল-ছলছল্ কূলে কুলে
ফেনিল যৌবন ওঠে দু’লে,
চাঁদিনী উজল্ তনু ঝলমল্
পরানে উছল জাগে জোয়ার –
আধো ঘুমে আসে তার নয়ন ছেয়ে॥
জল-বালা মুক্তা-মালা গাঁথে নিরালা চাঁদের তরে,
কাজল-বরণী তরুণী তটিনী চলেছে ধেয়ে॥
- ভাবার্থ: এই গানে উচ্ছল-তরঙ্গিত সাগরের রূপকে নৃত্যশীলা নারীর
রূপকতায়, কবি শৃঙ্গার রসে আবেশিত সাগরিকা হিসেব উপস্থাপন করেছেন।
প্রাকৃতিক বিধিতে পূর্ণিমায় সাগরের উচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। কবি তার কল্প-বাস্তবতার
শৈল্পিক উপমায় বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন এই ভাবে, যেনো প্রিয়তম চাঁদের দেখা পেয়ে-
সুনীল সাগরের হৃদয়-সাগর প্রেমোচ্ছ্বাসে উদ্বেলিত হয়ে উঠেছে। যেন তারই আবেশে
সাগরকূলে জলতরঙ্গের নৃত্যশীলা জলপরীরা নূপুরের মিষ্টি ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছে।
কবি সাগরের জল-ছলছল তরঙ্গকে সফেন যৌবনের তরঙ্গের সাথে তুলনা করেছেন। চাঁদনি
রাতের উজ্জ্বল আলোয় সাগরের সৌন্দর্য বিভায় ছলমল করছে এবং তার পরানে জেগে উঠেছে
যৌবন-জোয়ার। তারই যৌবনের মোহিত মায়ায় আধো ঘুমের মধুর আবেশ ছড়িয়ে পড়েছে তার
চোখের পাতায়। প্রেমিকা সাগরিকা তার প্রণয়মালা রচনা করে নিরালা প্রেমিক চাঁদের
জন্য। আর সে উৎসবে সখি হিসেবে যোগ দিতে ছুটে চলেছে কাজলবরণ তরুণী তটিনী।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে
কিছু জানা যায় না। 'গুলবাগিচা'
গীতি-সংকলনের প্রথম সংস্করণে [১৩ আষাঢ় ১৩৪০, ২৭ জুন ১৯৩৩] গানটি
প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৪ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ:
- গুলবাগিচা
- প্রথম সংস্করণ [১৩ আষাঢ় ১৩৪০, ২৭ জুন ১৯৩৩। ভৈরবী-দাদরা। পৃষ্ঠা: ৫৮]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংকলন। পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী।
ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১। গুল-বাগিচা। গান সংখ্যা ৫১। ভৈরবী-দাদরা। পৃষ্ঠা ২৫৫-২৫৬ ]
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা
১৫১১। রাগ:
ভৈরবী, তাল: দাদরা। পৃষ্ঠা:
৪৫৪।]
- রেকর্ড: মেগাফোন [অক্টোবর ১৯৩৩ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪০ বঙ্গাব্দ)]। জেএনজি ৭৬। শিল্পী: শ্রীমতী সাহানা