বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম:
বনদেবী জাগো সহকার-করে বাঁধো বল্লরী-কঙ্কণ
বনদেবী জাগো
সহকার-করে বাঁধো বল্লরী-কঙ্কণ।
আকাশে জাগাও তব নব কিশলয়-কেতন-কম্পন॥
অশান্ত দক্ষিণা সমীরণ
গেয়ে যাক বসন্ত আবাহন,
বনে বনে হোক ফুল-আল্পনা-অঙ্কন॥
মধূপ গুঞ্জরে ঝিল্লীর মণি-মঞ্জিরে তোলো ঝংকার,
মুহু মুহু কুহু রবে আনো আনন্দিত ছন্দ ধরণীতে অলকানন্দার।
ঝরা পল্লব মর্মরে
মৃদু ঝরনার ঝর্ঝরে,
মুখরিত হোক তব বন-ভূমি-অঙ্গন॥
-
ভাবার্থ: এই গানে কবি বনভূমির অধিকর্তী হিসেবে বনদেবীকে ওঠে আসার আহ্বান
করেছেন কল্প-ভাবনা থেকে। মূলত বসন্তের বনরাজীকেই তিনি দেবীর আসনে বসিয়ে বনের
বন্দনা করেছেন এই গানে। আর বসন্তের বনরাজী মূলত বসন্তেরই অংশ। এই বিচারে এও বলা
যায়- বসন্তের বনরাজীর মাধ্যমে কবি বসন্তকেই আহ্বান করেছেন রূপকতার ছলে।
কবি চান বনভূমি তার অতুল সম্পদ ও সৌন্দর্যে সুবেশিত রূপে বিকশিত হয়ে উঠুক। বন
বল্লরী কঙ্কন হয়ে শোভা পাক তার হাতে। আকাশে নব কিশলয়ের বিজয় নিশান মাথা উঁচু করে
তার গৌরব প্রকাশ করুক।
অশান্ত দখিনা বাতাস গেয়ে যাক বসন্তের আবাহন সঙ্গীত। বনে বনে অঙ্কিত হোক
ফুল-আলিম্পন। ভ্রমরের গুঞ্জনে, ঝিল্লীর ঝঙ্কৃত ধ্বনিতে মুখরিত হোক বনভূমি। আর
মুহু মুহু কোকিলের ডাকে অলকানন্দার স্রোতধারার ছন্দের অনুরণনে ভরে উঠুক ধরণী।
ঝরা পাতার মর্মর ধ্বনি, মৃদু ঝর্নার ঝিরিঝিরি ধ্বনিতে মুখরিত হোক বনভূমির অঙ্গন।
-
রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার ২৬ অগ্রহায়ণ ১৩৪২) এইচএমভি
রেকর্ড কোম্পানির সাথে নজরুলের গান রেকর্ডের বিষয় চুক্তি হয়েছিল। এই
চুক্তিতে এই গানটি ছিল। পরে গানটি প্রকাশিত হয় নি। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৬
বৎসর ৬ মাস।
-
রেকর্ড:
- এইচএমভি'র সাথে নজরুলে চুক্তি [১২ ডিসেম্বর ১৯৩৫
(বৃহস্পতিবার ২৬ অগ্রহায়ণ ১৩৪২)।
- টুইন [১৯৩৫। শিল্পী:
সুনীতি সরকার। রেকর্ডটি বাতিল হয়েছিল।]