গীতাঞ্জলি
গ্রন্থ পরিচিতি
রবীন্দ্ররচনাবলী একাদশ খণ্ড
(বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৯৩ মুদ্রণানুসারে)
গীতাঞ্জলি ১৩১৭ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
শ্রদ্ধেয় ক্ষিতিমোহন সেন, মহাশয়ের নিকট গীতাঞ্জলির অনেক অংশের
পাণ্ডুলিপি রক্ষিত ছিল; তাহারই সাহায্যে গীতাঞ্জলির অনেক গান ও কবিতার রচনাস্থান
নির্দিষ্ট, এবং রচনা-তারিখ ও পাঠ সংশোধিত হইয়াছে। মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয়ের
সংগ্রহে গীতাঞ্জলির অনেক গানের কবির হাতে লেখা প্রেস-কপি রক্ষিত ছিল, তাহা হইতেও
সাহায্য পাওয়া গিয়াছে।
১৩৩৪ সালে প্রকাশিত সংস্করণে 'যাবার দিনে এই কথাটি' গানটি প্রথম
গীতাঞ্জলির অন্তর্গত হয়। পাণ্ডুলিপি-পর্যালোচনার ফলে এই গানটি রচনা-তারিখ জানা
গিয়াছে ও তদনুসারে ২৫ বৈশাখ ১৩৪৯-এ প্রকাশিত সংস্করণে কালানুক্রমে সন্নিবেশিত
হইয়াছে। গানটি পাণ্ডুলিপির প্রতিলিপিও এই খণ্ডে মুদ্রিত হইল।
গীতাঞ্জলির প্রথম সংস্করণে মুদ্রিত 'বাঁচান বাঁচি মরেন মরি'
গানটি পরবর্তী কোনো সংস্করণে বর্জিত হয়, তদবধি এটি গীতাঞ্জলিতে আর মুদ্রিত হয় না।
গানটি প্রায়শ্চিত্ত নাটকের অন্তর্গত; প্রায়শ্চিত্ত রবীন্দ্র-রচনাবলীর নবম খণ্ডে
মুদ্রিত হইয়াছে।
গীতাঞ্জলির পাণ্ডুলিপি হইতে অনেকগুলি গানের মূল বা স্বতন্ত্র
পাঠ মুদ্রিত হইল, গ্রন্থে মুদ্রিত পাঠ হইতে সেগুলি অনেকাংশে পৃথক।—
৫০ নিভৃত প্রাণের পরম দেবতা যেখানে বসেন একা সেথাকার দ্বার খোলো হে ভকত, লভিব তাঁহার দেখা। শুনেছি কেবলি বাহিরের কথা, শুনি নি গভীর গোপন বারতা, নীরব নিবিড় সন্ধ্যাবেলার আরতি হয় নি শেখা। করুণা করিয়া বাহু ধরি মোর আমারে দেখাও তবে— পূজার থালায় জীবনপ্রদীপ কেমনে সাজাতে হবে। যেথা নিখিলের অমর সাধনা মহাপূজালোক করিছে রচনা সেথায় কেমনে রাখিয়া আসিব একটি জ্যোতির রেখা।১ ৫২ তুমি আমার আপন, তুমি আছ আমার কাছে, তোমার মাঝে মোর জীবনের সব আনন্দ আছে— এই কথাটি বলতে দাও হে বলতে দাও। আমায় দাও সুধাময় সুর, আমার বাণী করো সুমধুর, আমার প্রিয়তম তুমি, এই কথাটি বলতে দাও হে বলতে দাও! তোমার মধু ঢালো চিত্তে মম, বাক্য করো সুধাসম, তুমি আমার প্রিয়তম এই কথাটি বলতে দাও। এই নিখিল আকাশ নিখিল ধরা তোমারি আনন্দে ভরা, তুমিই আমার হৃদয়হরা এই কথাটি বলতে দাও। আমার দৈন্য বুঝেই ভালোবাস, দুঃখ দেখেই কাছে আস, ক্ষুদ্র জেনেই স্নেহে হাস, এই কথাটি বলতে দাও।
৫৭ |
|
১ এই রচনাটি সংশোধিত আকারে ভারতীতে প্রকাশিত হইয়াছিল। ভারতীর সেই সংখ্যায় নন্দলাল বসুর একখানি চিত্রও প্রকাশিত হয়, চিত্রটি দেখিয়া গানটি লিখিত, ভারতীতে এইরূপ সংবাদ প্রকাশিত হইয়াছিল। | |