গীতিমাল্য
৬০-৬৯

             

                         


                    ৬
রাজপুরীতে বাজায় বাঁশি
                বেলাশেষের তান।
পথে চলি, শুধায় পথিক
                "কি নিলি তোর দান?"
দেখাব যে সবার কাছে
এমন আমার কী-বা আছে?
সঙ্গে আমার আছে শুধু
                এই কখানি গান।
ঘরে আমার রাখতে যে হয়
        বহুলোকের মন।
অনেক বাঁশি, অনেক কাঁসি
        অনেক আয়োজন।
বঁধুর কাছে আসার বেলায়
গানটি শুধু নিলেম গলায়,
তারি গলার মাল্য ক’রে
        করব মূল্যবান ॥

 

শিলাইদহ
১৫ ফাল্গুন [১৩২০]


                        ৬৫
            কার হাতে এই মালা তোমার পাঠালে
আজ                 ফাগুন-দিনের সকালে ॥
            তার      বর্ণে তোমার নামের রেখা,
                       গন্ধে তোমার ছন্দ লেখা,
                            সেই মালাটি বেঁধেছি মোর কপালে
                                    আজ ফাগুন-দিনের সকালে।
            গানটি    তোমার চলে এল আকাশে
আজ                 ফাগুন-দিনের বাতাসে।
            ওগো,   আমার নামটি তোমার সুরে
                      কেমন করে দিলে জুড়ে
                      লুকিয়ে তুমি ওই গানেরই আড়ালে
                                    আজ ফাগুন-দিনের সকালে।
শান্তিনিকেতন
১৮ ফাল্গুন ১৩২০

 

            ৬৬
এত আলো জ্বালিয়েছ এই গগনে
                কী উৎসবের লগনে।
        সব আলোটি কেমন করে
        ফেল আমার মুখের 'পরে,
                আপনি থাকো আলোর পিছনে।

    প্রেমটি যেদিন জ্বালি হৃদয়-গগনে
                কী উৎসবের লগনে

        সব আলো তার কেমন করে
        পড়ে তোমার মুখের ’পরে,
                আপনি পড়ি আলোর পিছনে।

শান্তিনিকেতন
২০ ফাল্গুন ১৩২০