জাতীয় সংগীত

 

                  

                             ১

            ভারত রে, তোর কলঙ্কিত পরমাণুরাশি

যত দিন সিন্ধু না ফেলিবে গ্রাসি    তত দিন তুই কাঁদ্ রে

এই হিমগিরি স্পর্শিয়া আকাশ      প্রাচীন হিন্দুর কীর্তি-ইতিহাস

যত দিন তোর শিয়রে দাঁড়ায়ে     অশ্রুজলে তোর বক্ষ ভাসাইবে

            তত দিন তুই কাঁদ্ রে

যে দিন তোমার গিয়াছে চলিয়া                সে দিন তো আর আসিবে না।

যে রবি পশ্চিমে পড়েছে ঢালিয়া    সে আর পুরবে উঠিবে না।

এমনি সকল নীচ হীনপ্রাণ       জনমেছে তোর কলঙ্কি সন্তান

একটি বিন্দু অশ্রুও কেহ        তোমার তরে দেয় না ঢালি।

যে দিন    তোমার তরে শোণিত ঢালিত    সে দিন যখন গিয়াছে চলি

            তখন, ভারত, কাঁদ্ রে

তবে কেন বিধি এত অলঙ্কারে    রেখেছ সাজায়ে ভারতকায়।

ভারতের বনে পাখি গায় গান,   স্বর্ণমেঘ-মাখা ভারতবিমান-

হেথাকার লতা ফুলে ফুলে ভরা,  স্বর্ণশস্যময়ী হেথাকার ধরা-

            প্রফুল্ল তটিনী বহিয়ে যায়।

কেন লজ্জাহীনা অলঙ্কার পরি  রোগশুষ্কমুখে হাসিরাশি ভরি

            রূপের গরব করিস হায়।

     যে দিন গিয়াছে সে তো ফিরিবে না,

            তবে, রে ভারত, কাঁদ্ রে

ভারত, তোর এ কলঙ্ক দেখিয়া    শরমে মলিন মুখ লুকাইয়া

আমরা যে কবি বিজনে কাঁদিব,   বিজনে বিষাদে বীণা ঝঙ্কারিব,

            তাতেও যখন স্বাধীনতা নাই

                        তখন, ভারত, কাঁদ্ রে

                     ২

অয়ি বিষাদিনী বীণা, আয় সখী,            গা লো সেই-সব পুরানো গান-

বহুদিনকার লুকানো স্বপনে     ভরিয়া দে-না লো আঁধার প্রাণ

হা-রে হতবিধি, মনে পড়ে তোর           সেই একদিন ছিল

আমি আর্যলক্ষ্মী এই হিমালয়ে   এই বিনোদিনী বীণা করে লয়ে

যে গান গেয়েছি সে গান শুনিয়া   জগত চমকি উঠিয়াছিল

আমি অর্জুনেরে-আমি যুধিষ্ঠিরে               করিয়াছি স্তনদান।

এই কোলে বসি বাল্মীকি করেছে           পুণ্য রামায়ণ গান।

            আজ অভাগিনী-আজ অনাথিনী

ভয়ে ভয়ে ভয়ে লুকায়ে লুকায়ে           নীরবে নীরবে কাঁদি,

পাছে জননীর রোদন শুনিয়া    একটি সন্তান উঠে রে জাগিয়া!

            কাঁদিতেও কেহ দেয় না বিধি

হায় রে বিধাতা, জানে না তাহারা          সে দিন গিয়াছে চলি

যে দিন মুছিতে বিন্দু-অশ্রুধার             কত-না করিত সন্তান আমার-

            কত-না শোণিত দিত রে ঢালি

                    ৩

শোনো শোনো আমাদের ব্যথা    দেবদেব, প্রভু, দয়াময়-

আমাদের ঝরিছে নয়ন,         আমাদের ফাটিছে হৃদয়

চিরদিন আঁধার না রয়- রবি উঠে, নিশি দূর হয়-

এ দেশের মাথার উপরে        এ নিশীথ হবে না কি ক্ষয়।

চিরদিন ঝরিবে নয়ন?           চিরদিন ফাটিবে হৃদয়?!

মরমে লুকানো কত দুখ,        ঢাকিয়া রয়েছি ম্লান মুখ-

কাঁদিবার নাই অবসর-          কথা নাই, শুধু ফাটে বুক।

সঙ্কোচে ম্রিয়মাণ প্রায়,          দশ দিশি বিভীষিকাময়-

হেন হীন দীনহীন দেশে         বুঝি তব হবে না আলয়।

চিরদিন ঝরিবে নয়ন,           চিরদিন ফাটিবে হৃদয়

কোন কালে তুলিব কি মাথা।       জাগিবে কি অচেতন প্রাণ।

ভারতের প্রভাতগগনে           উঠিবে কি তব জয়গান।

আশ্বাসবচন কোনো ঠাঁই         কোনোদিন শুনিতে না পাই-

শুনিতে তোমার বাণী তাই       মোরা সবে রয়েছি চাহিয়া

বলো, প্রভু, মুছিবে এ আঁখি,   চিরদিন ফাটিবে না হিয়া

                  ৪

            এ কি অন্ধকার এ ভারতভূমি! 

                        বুঝি, পিতা, তারে ছেড়ে গেছ তুমি।

প্রতি পলে পলে ডুবে রসাতলে-কে তারে উদ্ধার করিবে

চারি দিকে চাই, নাহি হেরি গতি। নাহি যে আশ্রয়, অসহায় অতি।

            আজি এ আঁধারে বিপদপাথারে     কাহার চরণ ধরিবে।

তুমি চাও পিতা, ঘুচাও এ দুখ।               অভাগা দেশের হোয়ো না বিমুখ-

            নহিলে আঁধারে বিপদপাথারে  কাহার চরণ ধরিবে।

 

দেখো চেয়ে তব সহস্র সন্তান   লাজে নতশির, ভয়ে কম্পমান,

            কাঁদিছে সহিছে শত অপমান- লাজ মান আর থাকে না।

হীনতা লয়েছে মাথায় তুলিয়া, তোমারেও তাই গিয়াছে ভুলিয়া,

            দয়াময় ব’লে আকুলহৃদয়ে    তোমারেও তারা ডাকে না।

তুমি চাও পিতা, তুমি চাও চাও।           এ হীনতা-পাপ এ দুঃখ ঘুচাও।

            ললাটের কলঙ্ক মুছাও মুছাও-নহিলে এ দেশ থাকে না।

 

তুমি যবে ছিলে এ পুণ্যভবনে  কী সৌরভসুধা বহিত পবনে,

            কী আনন্দগান উঠিত গগনে,   কী প্রতিভাজ্যোতি ঝলিত।

            ভারত-অরণ্যে ঋষিদের গান   অনন্তসদনে করিত প্রয়ান-

            তোমারে চাহিয়া পুণ্যপথ দিয়া সকলে মিলিয়া চলিত।

আজি কী হয়েছে! চাও পিতা, চাও!       এ তাপ এ পাপ এ দুখ ঘুচাও।

            মোরা তো রয়েছি তোমারি সন্তান

                        যদিও হয়েছি পতিত

                    ৫

                        ঢাকো রে মুখ, চন্দ্রমা, জলদে।

            বিহগেরা থামো থামো।         আঁধারে কাঁদো গো তুমি ধরা

গাবে যদি গাও রে সবে         গাও রে শত অশনি-মহানিনাদে-

   ভীষণ প্রলয়সঙ্গীতে জাগাও, জাগাও, জাগাও রে এ ভারতে

বনবিহঙ্গ, তুমি ও সবে          গাও রে শত অশনি-মহানিনাদে-

            আনন্দরাগিণী আজি কেন বাজিছে এত হরষে-

                        ছিঁড়ে ফেল্ বীণা আজি বিষাদের দিনে

                  ৬

            দেশে দেশে ভ্রমি  তব দুখগান গাহিয়ে

নগরে প্রান্তরে বনে বনে।       অশ্রু ঝরে দু নয়নে,

            পাষাণ হৃদয় কাঁদে সে কাহিনী শুনিয়ে।

জ্বলিয়া উঠে অযুত প্রাণ,       এক সাথে মিলি এক গান গায়-

নয়নে অনল ভায়-শূন্য কাঁপে অভ্রভেদী বজ্রনির্ঘোষে!

            ভয়ে সবে নীরবে চাহিয়ে

 

            ভাই বন্ধু তোমা বিনা আর মোর কেহ নাই।

            তুমি পিতা, তুমি মাতা, তুমি মোর সকলই।

তোমারি দুঃখে কাঁদিব মাতা, তোমারি দুঃখ কাঁদাব।

তোমারি তরে রেখেছি প্রাণ,    তোমারি তরে ত্যজিব।

            সকল দুঃখ সহিব সুখে

                        তোমারি মুখ চাহিয়ে

                ৭

এক সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্রটি মন,

এক কার্ষে সঁপিয়াছি সহস্র জীবন-

            বন্দে মাতরম্

আসুক সহস্র বাধা, বাধুক প্রলয়,

আমরা সহস্র প্রাণ রহিব নির্ভয়-

            বন্দে মাতরম্

আমরা ডরাইব না ঝটিকা-ঝঞ্ঝায়,

অযুত তরঙ্গ বক্ষে সহিব হেলায়।

টুটে তো টুটুক এই নশ্বর জীবন,

তবু না ছিঁড়িবে কভু এ দৃঢ় বন্ধন-

            বন্দে মাতরম্

              ৮

তোমারি তরে, মা, সঁপিনু এ দেহ।         তোমারি তরে, মা, সঁপিনু প্রাণ

তোমারি শোকে এ আঁখি বরষিবে,         এ বীণা তোমারি গাহিবে গান

যদিও এ বাহু অক্ষম দুর্বল      তোমারি কার্ষ সাধিবে।
যদিও এ অসি কলঙ্কে মলিন   তোমারি পাশ নাশিবে

যদিও, হে দেবী, শোণিতে আমার          কিছুই তোমার হবে না

তবু, ওগো মাতা পারি তা ঢালিতে         একতিল তব কলঙ্ক ক্ষালিতে-

            নিভাতে তোমার যাতনা।

যদুও, জননী, যদিও আমার    এ বীণায় কিছু নাহিক বল

কী জানি যদি, মা, একটি সন্তান,          জাগি উঠে শুনি এ বীণাতান

                 ৯

            তবু     পারি নে সঁপিতে প্রাণ।

পলে পলে মরি সেও ভালো, সহি     পদে পদে অপমান

কথার বাঁধুনি, কাঁদুনির পালা- চোখে নাহি কারো নীর।

আবেদন আর নিবেদনের থালা    ব’হে ব’হে নত শির।

কাঁদিয়ে সোহাগ, ছি ছি একি লাজ!    জগতের মাঝে ভিখারির সাজ-

আপনি করি নে আপনার কাজ,    পরের ’পরে অভিমান

আপনি নামাও কলঙ্কপশরা,    যেয়ো না পরের দ্বার-

পরের পায়ে ধ’রে মান ভিক্ষা করা         সকল ভিক্ষার ছার

‘দাও দাও’ ব’লে পরের পিছু পিছু কাঁদিয়া বেড়ালে মেলে না তো কিছু-

মান পেতে চাও, প্রাণ পেতে চাও,   প্রাণ আগে করো দান

                  ১০

            কেন চেয়ে আছ, গো মা, মুখপানে।

এরা       চাহে না তোমারে চাহে না যে,   আপন মায়েরে নাহি জানে।

এরা তোমায় কিছু দেবে না, দেবে না- মিথ্যা কহে শুধু কত কী ভানে।

তুমি তো দিতেছ, মা, যা আছে তোমারি- স্বর্ণশস্য তব, জাহ্নবীবারি,

            জ্ঞান ধর্ম কত পুণ্যকাহিনী।

এরা কী দেবে তোরে! কিছু না, কিছু না। মিথ্যা কবে শুধু হীন পরানে

মনের বেদনা রাখো, মা, মনে।    নয়নবারি নিবারো নয়নে

মুখ লুকাও, মা, ধূলিশয়নে-  ভুলে থাকো য হীন সন্তানে।

শূন্য-পানে চেয়ে প্রহর গণি গণি   দেখো কাটে কিনা দীর্ঘ রজনী।

দুঃখ জানায়ে কী হবে, জননী,   নির্মম চেতনাহীন পাষাণে

                  ১১

একবার তোরা মা বলিয়া ডাক,     জগতজনের শ্রবণ জুড়াক,

হিমাদ্রিপাষাণ কেঁদে গলে যাক-  মুখ তুলে আজি চাহো রে

দাঁড়া দেখি তোরা আত্মপর ভুলি,   হৃদয়ে হৃদয়ে ছুটুক বিজুলি-

প্রভাতগগনে কোটি শির তুলি   নির্ভয়ে আজি গাহো রে

বিশ কোটি কণ্ঠে মা বলে ডাকিলে   রোমাঞ্চ উঠিবে অনন্ত নিখিলে,

বিশ কোটি ছেলে মেয়েরে ঘেরিলে  দশ দিক সুখে হাসিবে।

সেদিন প্রভাতে নূতন            তপন   নূতন জীবন করিবে বপন

এনহে কাহিনী, এ নহে স্বপন- আসিবে সে দিন আসিবে

আপনার মায়ে মা ব’লে ডাকিলে,  আপনার ভায়ে হৃদয়ে রাখিলে,

সব পাপ তাপ দূরে যায় চলে  পুণ্য প্রেমের বাতাসে।

সেথায় বিরাজে দেব-আশীর্বাদ –না থাকে কলহ, না থাকে বিষাদ-

ঘুচে অপমান, জেগে ওঠে প্রাণ- বিমল প্রতিভা বিকাশে

               ১২

কে এসে যায় ফিরে ফিরে      আকুল নয়ননীরে।

কে বৃথা আশাভরে     চাহিছে মুখ’পরে।

            সে যে আমার জননী রে

কাহার সুধাময়ী বাণী   মিলায় অনাদর মানি।

কাহার ভাষা হায়    ভুলিতে সবে চায়।

            সে যে আমার জননী রে

ক্ষণেক স্নেহ-কোল ছাড়ি   চিনিতে আর নাহি পারি।

আপন সন্তান   করিছে অপমান-

            সে যে আমার জননী রে

পূণ্য কুটিরে বিষণ্ণ   কে বসি সাজাইয়া অন্ন।

সে স্নেহ-উপহার  রুচে না মুখে আর।

            সে যে আমার জননী রে

            ১৩

হে ভারত, আজি তোমারি সভায়           শুন এ কবির গান।

তোমার চরণে নবীন হরষে      এনেছি পূজার দান।

এনেছি মোদের দেহের শকতি,    এনেছি মোদের মনের ভকতি,

এনেছি মোদের ধর্মের মতি,    এনেছি মোদের প্রাণ-

এনেছি মোদের শ্রেষ্ঠ অর্ঘ্য      তোমারে করিতে দান

 

কাঞ্চনথালি নাহি আমাদের,    অন্ন নাহিকো জুটে।

যা আছে মোদের এনেছি সাজায়ে          নবীন পর্ণপুটে।

সমারোহে আজ নাই প্রয়োজন- দীনের এ পূজা, দীন আয়োজন-

চিরদারিদ্র্য করিব মোচন   চরণের ধুলা লুটে।

সুরদুর্লভ তোমার প্রসাদ  লইব পূর্ণপুটে

 

রাজা তুমি নহ, হে মহাতাপস,    তুমিই প্রাণের প্রিয়।

ভিক্ষাভূষন ফেলিয়া পরিব   তোমারি উত্তরীয়।

দৈন্যের মাঝে আছে তব ধন,  মৌনের মাঝে রয়েছে গোপন

তোমার মন্ত্র অগ্নিবচন- তাই আমাদের দিয়ো।

পরের সজ্জা ফেলিয়া পরিব    তোমারি উত্তরীয়।

 

দাও আমাদের অভয়মন্ত্র,       অশোকমন্ত্র তব।

দাও আমাদের অমৃতমন্ত্র,       দাও গো জীবন নব।

যে জীবন ছিল তব তপোবনে,    যে জীবন ছিল তব রাজাসনে,

মুক্ত দীপ্ত সে মহাজীবনে  চিত্ত ভরিয়া লব।

মৃত্যুতরণ শঙ্কাহরণ  দাও সে মন্ত্র তব

                  ১৪

নব বৎসরে করিলাম পণ        লব স্বদেশের দীক্ষা-

তব আশ্রমে তোমার চরণে,     হে ভারত, লব শিক্ষা।

পরের ভূষণ, পরের বসন,    তেয়াগিব আজ পরের অশন-

যদি হই দীন হইব হীন,        ছাড়িব পরের ভিক্ষা।

নব বৎসরে করিলাম পণ        লব স্বদেশের দীক্ষা

 

না থাকে প্রাসাদ আছে তো কুটির   কল্যাণে সুপবিত্র।

না থাকে নগর আছে তব বন    ফলে ফুলে সুবিচিত্র।

তোমা হতে যত দূরে গেছি স’রে  তোমারে দেখেছি তত ছোটো ক’রে।

কাছে দেখি আজ, হে হৃদয়রাজ, তুমি পুরাতন মিত্র।

হে তাপস, তব পর্ণকুঠির   কল্যাণে সুপবিত্র।

 

পরের বাক্যে তব পর হয়ে   দিয়েছি পেয়েছি লজ্জা।

তোমারে ভুলিতে ফিরায়েছি মুখ,   পরেছি পরের সজ্জা।

কিছু নাহি গণি, কিছু নাহি কহি,  জপিছ মন্ত্র অন্তরে রহি-

তব সনাতন ধ্যানের আসন মোদের অস্থিমজ্জা।

পরের বুলিতে তোমারে ভুলিতে   দিয়েছি পেয়েছি লজ্জ

 

সে-সকল লাজ তেয়াগিব আজ,  লইব তোমার দীক্ষা।

তব পদতলে বসিয়া বিরলে    শিখিব তোমার শিক্ষা।

তোমার ধর্ম, তোমার কর্ম,   তব মন্ত্রের গভীর মর্ম

লইব তুলিয়া সকল ভুলিয়া   ছাড়িয়া পরের ভিক্ষা।

তব গৌরবে গরব মানিব,     লইব তোমার দীক্ষা

                   ১৫

            ওরে ভাই, মিথ্যা ভেবো না।

হবার নয় যা কোনোমতেই হবেই না সে, হতে দেব না

পড়ব না রে ধুলায় লুটে,   যাবে নারে বাঁধন টুটে-যেতে দেব না।

     মাথা যাতে নত হবে এমন বোঝা মাথায় নেব না

            দুঃখ আছে, দুঃখ পেতেই হবে-

            যত দূরে যাবার আছে সে তো যেতেই হবে।

উপর-পানে চেয়ে ওরে ব্যথা নে রে বক্ষে ধ’রে- নে রে সকলে।

      নিঃসহায়ের সহায় যিনি বাজবে তাঁরে তোদের বেদনা

                   ১৬

আজ       সবাই জুটে আসুক ছুটে যে যেখানে থাকে-

এবার      যার খুশি সে বাঁধন কাটুক, আমরা বাঁধব মাকে।

আমরা     পরান দিয়ে আপন করে   বাঁধব তারে সত্যডোরে,

            সন্তানেরই বাহুপাশে বাঁধন লক্ষ পাকে।

আজ       ধনী গরিব সবাই সমান। আয় রে হিন্দু, আয় মুসলমান-

            আজকে সকল কাজ পড়ে থাক্, আয় রে লাখে লাখে।

আজ       দাও গো সবার দুয়ার খুলে  যাও গো সকল ভাবনা ভুলে-

            সকল ডাকের উপরে আজ মা আমাদের ডাকে