১৩

                        সমুখে শান্তিপারাবার-

                     ভাসাও তরণী হে কর্ণধার।

           তুমি হবে চিরসাথি, লও লও হে ক্রোড় পাতি-

              অসীমের পথে জ্বলিবে জ্যোতি ধ্রুবতারকার

                   মুক্তিদাতা, তোমার ক্ষমা তোমার দয়া

                        হবে চিরপাথেয় চিরযাত্রার।

          হয় যেন মর্তের বন্ধনক্ষয়, বিরাট বিশ্ব বাহু মেলি লয়-

                  পায় অন্তরে নির্ভয় পরিচয় মহা-অজানার

ক. গীতবিতানের আনুষ্ঠানিক সংগীত পর্যায়ের ১৩ সংখ্যক গান
  
 স্বরবিতান পঞ্চপঞ্চাশত্তম (৫৫) খণ্ডের ১৫ সংখ্যক গান
পৃষ্ঠা ৪৪-৪৫

খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি :
১. বিশ্বভারতী নিউজ (৮। ১৯৪১)
২. প্রবাসী (৫। ১৩৪৮)

           গানটি রবীন্দ্রনাথের  মৃত্যর প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল

গ. রচনাকাল ও স্থান : ৩ ডিসেম্বর ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ। [স্বরবিতান ৫৫]
                         
 রবীন্দ্রনাথের  ৭৮ বৎসর বয়সের রচনা

ঘ. প্রাসঙ্গিক পাঠ :  ১৩৪৬ সালের দিকে ডাকঘর নাটকের মহড়ার সময়, রবীন্দ্রনাথ এই গানটি রচনা করেছিলেন। এই গানটি যেন তাঁর মৃত্যুর পর গাওয়া হয়, এমন ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। এবং যথারীতি, রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর-  ২২ শ্রাবণ সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতন মন্দিরে এবং ৩২ শ্রাবণ শ্রাদ্ধবাসরে শান্তিনিকেতনে গীত হয়েছিল।

মুলত এই গানটি  'ডাকঘর'  নাটকের জন্য রচিত হলেও, ওই নাটকটি মঞ্চস্থ না হওয়ার কারণে- প্রকাশ্যে পরিবেশিত হয় নি। মাঝে মাঝে রবীন্দ্রনাথ নিজেই এই গানটি গাইতেন। এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু ব্যক্তির রচনা থেকে যা জানা যায়, তা হলো-

১. '১৩৪৬ সালে তিনি একবার তিন-চার মাস ধরে এই নাটকের (ডাকঘর) মহড়া দিয়েছিলেন, সেই সময় অধুনা বিখ্যাত 'সম্মুখে শান্তি-পারাবার' গানটি রচিত হয়। সেই সময় একদিন বলেছিলেন যে, তাঁর মৃত্যুর তো আর বেশি দেরি নেই, এটি যদিও অমলের মৃত্যুর গান কিন্তু এ গানটি তাঁরও মৃত্যুতে আমরা কাজে লাগাতে পারব।" [রবীন্দ্রসঙ্গীত। শান্তিদেব ঘোষ]

২.
"আর একবার ঠিক হল, নাটক হবে, 'ডাকঘর'। আমাকে গুরুদেব নিয়েছিলেন 'সুধা'র ভূমিকায়। প্রতিদিন রিহার্সালে যাওয়ার ব্যাপারটা আমার কাছে খুব আনন্দের ছিল। গুরুদেব নিজেই আমাদের অভিনয় শেখাতেন। ডাকঘরের গানগুলো আমার খুব ভালো লাগত। বিশেষ করে 'শুনি ওই রুনুঝুনু পায়ে পায়ে' গানটি। নাটকের রিহার্সালের শেষে প্রায়ই গুরুদেব গাইতেন, 'সম্মুখে শান্তি পারাবার'।" কী অপূর্ব ভঙ্গিতে তিনি গাইতেন! গাওয়া শেষ করে বলতেন, 'আমার মৃত্যুর পরে এ গান গেয়ো তোমরা'।"  [আনন্দধারা। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়]

এটি একটি ভাঙা গান। ইন্দিরাদেবী তাঁর রবীন্দ্রসংগীতের ত্রিবেণী সংগম গ্রন্থে এই গানের মূল গানের উল্লেখ করেছেন। গানটি হলো- লাইরি মোরে শ্যাম ইদোরিয়া [পূরবী]

ঙ. স্বরলিপিকার : শৈলজারঞ্জন মজুমদার

. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী : স্বরবিতান-৫৫-এ গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই উক্ত স্বরলিপিতে ছন্দোবিভাজন দেখানো হয়েছে, ৪ ছন্দ ; অর্থাৎ তালটি কাহারবা' হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে
গ্রহস্বর-সা লয়-মধ্য