যাবই আমি যাবই ওগো, বাণিজ্যেতে যাবই।
লক্ষ্মীরে হারাবই যদি, অলক্ষ্মীরে পাবই।
সাজিয়ে নিয়ে জাহাজখানি বসিয়ে হাজার দাঁড়ি
কোন্ পুরীতে যাব দিয়ে কোন্ সাগরে পাড়ি।
কোন্ তারকা লক্ষ্য করি কূল-কিনারা পরিহরি
কোন্ দিকে যে বাইব তরী
বিরাট কালো নীরে-
মরব না আর ব্যর্থ আশায় সোনার বালুর তীরে॥
নীলের কোলে শ্যামল সে দ্বীপ প্রবাল দিয়ে ঘেরা।
শৈলচূড়ায় নীড় বেঁধেছে সাগরবিহঙ্গেরা।
নারিকেলের শাখে শাখে ঝোড়ো হাওয়া কেবল ডাকে,
ঘন বনের ফাঁকে ফাঁকে বইছে নগনদী।
সাত রাজার ধন মানিক পাবই সেথায় নামি যদি॥
হেরো, সাগর উঠে তরঙ্গিয়া বাতাস বহে বেগে।
অকূল-মাঝে ভাসিয়ে তরী
যাচ্ছি অজানায়।
আমি শুধু একলা নেয়ে আমার শূন্য নায়।
নব নব পবন-ভরে যাব দ্বীপে দ্বীপান্তরে,
নেব তরী পূর্ণ ক'রে
অপূর্ব ধন যত।
ভিখারি মন ফিরবে যখন ফিরবে রাজার মতো॥
ক. গীতবিতানের বিচিত্র
পর্যায়ের
৯৯ সংখ্যক গান।
স্বরবিতান দ্বাদশ (১২, তাসের দেশ)
খণ্ডের গান। বাণী অংশ :
পৃষ্ঠা ১২, ১৪-১৫। স্বরলিপি অংশ : ৪৮-৫১ (প্রথমাংশ), ৫৬-৫৯
(দ্বিতীয়াংশ)।
খ.
প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি :
১.
বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মীঃ।
ক্ষণিকা।
(শ্রাবণ ১৩০৭)
বিশ্বভারতী কর্তৃক প্রকাশিত রবীন্দ্ররচনাবলী
সপ্তম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৬১।
২.
তাসের দেশ
(ভাদ্র
১৩৪০)।
প্রথম দৃশ্য,
রাজপুত্রের গান।
রবীন্দ্ররচনাবলী ২৩ খণ্ড। পৃষ্ঠা : ১৬৩-৬৪।
রবীন্দ্রনাথের ৭২
বৎসর বয়সে ৪
মাস বয়সে প্রথম প্রকাশিত হয়।
গ. রচনাকাল ও স্থান :
শ্রাবণ ১৩০৭
বঙ্গাব্দ।
[জুলাই ১৯০০]। কালিগ্রাম।
রবীন্দ্রনাথের
৩৯
বৎসর বয়সের
রচনা।
[সূত্র : গীতবিতান কালানুক্রমিক
সূচী। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় ]
ঘ. প্রাসঙ্গিক পাঠ: মূল কবিতাটি বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মীঃ নামে রচিত হয়েছিল। এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের ক্ষণিকা নামক কাব্যগ্রন্থে গৃহীত হয়েছে। এর প্রথম দশ পঙ্ক্তি বাদ দিয়ে ২৪ পঙ্ক্তির গীতরূপ পাওয়া যায়। এই গীতরূপটি তাসের দেশ নাটিকাতে সংলাপের মতো করে ভেঙে ভেঙে ব্যবহার করা হয়েছে।
ঙ. স্বরলিপিকার :
শান্তিদেব ঘোষ।
চ.
সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী :
স্বরবিতান-১২'এ
গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই।
উক্ত স্বরলিপিতে ছন্দোবিভাজন
দেখানো
হয়েছে,
৩।৩
ছন্দ ;
অর্থাৎ তালটি
'দাদরা'
হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে।
গ্রহস্বর-পা।
লয়-দ্রুত।