বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিরোনাম: দীনহীন বালিকার সাজে এসেছিনু এ ঘোর বনমাঝে
পাঠ ও পাঠভেদ:
দীনহীন বালিকার সাজে এসেছিনু এ ঘোর বনমাঝে
গলাতে পাষাণ তোর মন— কেন, বৎস, শোন্ তাহা শোন্!
আমি বীণাপাণি তোরে এসেছি শিখাতে গান,
তোর গানে গলে যাবে সহস্র পাষাণপ্রাণ।
যে রাগিণী শুনে তোর গলেছে কঠোর মন
সে রাগিণী তোরি কণ্ঠে বাজিবে রে অনুক্ষণ।
অধীর হইয়া সিন্ধু কাঁদিবে চরণতলে,
চারি দিকে দিকবধূ আকুল নয়নজলে।
মাথার উপরে তোর কাঁদিবে সহস্র তারা, অশনি গলিয়া গিয়া হইবে অশ্রুর ধারা।
যে করুণ রসে আজি ডুবিল রে ও হৃদয়
শত স্রোতে তুই তাহা ঢালিবি জগৎময়।
যেথায় হিমাদ্রি আছে সেথা তোর নাম রবে,
যেথায় জাহ্নবী বহে তোর কাব্যস্রোত ববে।
সে জাহ্নবী বহিবেক অযুত হৃদয় দিয়া
শ্মশান পবিত্র করি, মরুভূমি উর্বারিয়া।
মোর পদ্মাসনতলে রহিবে আসন তোর,
নিত্য নব নব গীতে সতত রহিবি ভোর।
বসি তোর পদতলে কবি-বালকেরা যত
শুনি তোর কণ্ঠস্বর শিখিবে সঙ্গীত কত।
এই নে আমার বীণা, দিনু তোরে উপহার,
যে গান গাহিতে সাধ ধ্বনিবে ইহার তার।