হে নিরুপমা,
গানে যদি লাগে বিহ্বল তান করিয়ো ক্ষমা
ঝরোঝরো ধারা আজি উতরোল, নদীকূলে-কূলে উঠে কল্লোল,
বনে বনে গাহে মর্মরস্বরে নবীন পাতা।
সজল পবন দিশে দিশে তোলে বাদলগাথা॥
হে নিরুপমা,
চপলতা আজি যদি ঘটে তবে করিয়ো ক্ষমা।
তোমার দুখানি কালো আঁখি-'পরে বরষার কালো ছায়াখানি পড়ে,
ঘন কালো তব কুঞ্চিত কেশে যূথীর মালা।
তোমারি চরণে নববরষার বরণডালা॥
হে নিরুপমা,
চপলতা আজি যদি ঘটে তবে করিয়ো ক্ষমা।
এল বরষার সঘন দিবস, বনরাজি আজি ব্যাকুল বিবশ,
বকুলবীথিকা মুকুলে মত্ত কানন-'পরে।
নবকদম্ব মদির গন্ধে আকুল করে॥
হে নিরুপমা,
আঁখি যদি আজ করে অপরাধ, করিয়ো ক্ষমা।
হেরো আকাশের দূর কোণে কোণে বিজুলি চমকি ওঠে খনে খনে,
দ্রুত কৌতুকে তব বাতায়নে কী দেখে চেয়ে।
অধীর পবন কিসের লাগিয়া আসিছে ধেয়ে॥
পাঠভেদ:
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: ১৩০৭ বঙ্গাব্দের ১ আষাঢ় [শুক্রবার ১৫ জুন ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দ] শিলাইদহে -এ লিখিত অবিনয় কবিতাটি রচনা করেন, পরে এই কবিতাটিকে গানে পরিণত করেন।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২), পর্যায়: প্রেম ৩৯, উপবিভাগ: প্রেম বৈচিত্র্য-১২, পৃষ্ঠা: । [নমুনা]
ক্ষণিকা
(শ্রাবণ ১৩০৭ খ্রিষ্টাব্দ)। শিরোনাম "অবিনয়"।
রবীন্দ্ররচনাবলী, সপ্তম খণ্ড, বিশ্বভারতী, শ্রাবণ ১৩৯৩।
তাসের দেশ (১৯৪০ সংস্করণ)। দ্বিতীয় সংস্করণ থেকে এই গানটি বাদ পড়ে।
স্বরবিতান ঊনষষ্টিতম (৫৯) খণ্ডের (জ্যৈষ্ঠ ১৪১৩) ১৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা : ৪৫-৫০।
পত্রিকা:
বিশ্বভারতী পত্রিকা (কার্তিক-পৌষ ১৩৬৯ খ্রিষ্টাব্দ)।
রেকর্ডসূত্র:
প্রকাশের
কালানুক্রম: গানটি
রবীন্দ্রনাথের ৫৩ বৎসর ১১ মাস বয়সে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপি: [স্বরলিপি]
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার।
সুর ও তাল:
স্বরবিতান ঊনষষ্টিতম (৫৯) খণ্ডে (বিশ্বভারতী, ) গৃহীত গানটির স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি তালফেরতা (কাহারবা/ষষ্ঠী/তেওরা/দাদরা) তালে নিবদ্ধ।
স্বরবিতান ঊন-ষষ্ঠী খণ্ডে মুদ্রিত স্বরলিপিটির শেষে এই গানের তাল সম্পর্কে একটি নির্দেশ আছে। এই নির্দেশ হলো—
২।৪ ছন্দের অংশটুকু ৩।৩ ছন্দে গাওয়ার রীতির কথা বলা হয়েছে।
মিশ্র। এই গানটি তাল ফেরতা রাগমালার একটি উদাহরণ। গানটি পর পর বসন্তমুখারি, কালাংড়া, ভৈরবী, পিলু ও দেশ রাগে গ্রথিত। [রবীন্দ্রসঙ্গীতে রাগ-নির্ণয়। ভি.ভি. ওয়াঝলওয়ার। রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান । সংগীত-শিক্ষায়তন। বৈশাখ ১৩৯০। পৃষ্ঠা : ৭৬]
রাগ : পঞ্চম-কালাংড়া-পিলু-দেশ। তাল : কাহারবা-ষষ্ঠী-তেওরা-দাদরা। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা: ৮৫।
রাগ: সোহিনী, কালেংড়া, সিন্ধু, দেশ। তাল: কাহারবা, ষষ্ঠী, তেওরা, দাদরা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা: ১৪৭।
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ:
গ্রহস্বর: মা।
লয়: মধ্য/দ্রুত।