• গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২)-এর পাঠ:

জানি জানি তুমি এসেছ এ পথে মনের ভুলে।

তাই হোক তবে তাই হোক, দ্বার দিলেম খুলে॥

এসেছ তুমি তো বিনা আভরণে, মুখর নূপুর বাজে না চরণে,

তাই হোক তবে তাই হোক, এসো সহজ মনে।

ওই তো মালতী ঝরে পড়ে যায় মোর আঙিনায়,

শিথিল কবরী সাজাতে তোমার লও-না তুলে॥

কোনো আয়োজন নাই একেবারে, সুর বাঁধা নাই এ বীণার তারে,

তাই হোক তবে, এসো হৃদয়ের মৌনপারে।

ঝরোঝরো বারি ঝরে বনমাঝে, আমারি মনের সুর ওই বাজে,

উতলা হাওয়ার তালে তালে মন উঠিছে দুলে॥
 

• পাণ্ডুলিপির পাঠ: [পাণ্ডুলিপি: RBVBMS-478: প্রথম গান। পৃষ্ঠা: ১]
• পাঠভেদ:
গীতবিতানের প্রেম পর্যায়ের গানের সাথে প্রেম ও প্রকৃতি পর্যায়ের গানের পাঠভেদ লক্ষ্য করা যায়। নিচে 'প্রেম ও প্রকৃতি' পর্যায়ে গৃহীত গানের বাণী তুলে ধরা হলো।
                প্রেম ও প্রকৃতি- ৮৬
    জানি জানি এসেছ এ পথে মনের ভুলে।
    তাই হোক তবে তাই হোক— এসো তুমি, দিনু দ্বার খুলে॥
    এসেছ তুমি তো বিনা আভরণে, মুখর নূপুর বাজে না চরণে—
তাই হোক ওগো, তাই হোক।
মোর আঙিনায় মালতী ঝরিয়া পড়ে যায়—
তব শিথিল কবরীতে নিয়ো নিয়ো তুলে॥
কোনো আয়োজন নাই একেবারে, সুর বাঁধা হয় নি যে বীণার তারে—
তাই হোক ওগো, তাই হোক।
ঝরো ঝরো বারি ঝরে বনমাঝে, আমারই মনের সুর ওই বাজে—
বেণুশাখা-আন্দোলনে আমারই উতলা মন দুলে॥

 

• তথ্যানুসন্ধান

  • ক. রচনাকাল ও স্থান: বীথিকায় গৃহীত 'বাদলসন্ধ্যা' কবিতার সাথে 'শান্তিনিকেতন ২৩ শ্রাবণ ১৩৪২' উল্লেখ আছে। এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৭৪ বৎসর ৪ মাস।

  • খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:

    • গ্রন্থ: 

      • গীতবিতান-এর প্রেম (উপ-বিভাগ : প্রেম বৈচিত্র্য-১৭)পর্যায়ের ৪৪ সংখ্যক গান এবং প্রেম ও প্রকৃতি পর্যায়ের ৮৬ সংখ্যক গান।

      •  বীথিকা (শিরোনাম : বাদল সন্ধ্যা), ভাদ্র, ১৩৪২। রবীন্দ্ররচনাবলী ঊনবিংশ খণ্ড। বিশ্বভারতী। বৈশাখ ১৩৯৫।

      • স্বরবিতান অষ্টপঞ্চাশত্তম (৫৮) খণ্ডের (জ্যৈষ্ঠ ১৪১৩) ১৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা : ৬২-৬৩।

    • পত্রিকা:

      • বিচিত্রা ভাদ্র ১৩৪২ সংখ্যা। শিরোনাম : বাদল সন্ধ্যা [বর্ষামঙ্গল]।

  • গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
    • স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
    • সুর ও তাল:
      • স্বরবিতান অষ্টপঞ্চাশত্তম (৫৮) এ গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৩।৩ মাত্রা ছন্দে দাদরা তালে নিবদ্ধ। 
      • রাগ : দেশ। তার সপ্তকে কাফির ন্যায় কোমল গান্ধারের প্রয়োগ করা হয়েছে [রবীন্দ্রসঙ্গীতে রাগ-নির্ণয়। ভি.ভি. ওয়াঝলওয়ার। রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান। সংগীত-শিক্ষায়তন। বৈশাখ ১৩৯০। পৃষ্ঠা : ৭২]

      • রাগ: কেদারা। তাল: ত্রিতাল।  [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা । সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬)। পৃষ্ঠা: ৫২]।

      • অঙ্গ: কেদারা। তাল: ত্রিতাল।  [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত। প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমী, জুলাই ২০০১। পৃষ্ঠা: ৯২]
      • গ্রহস্বর : মা
      • লয় : মধ্য।