বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
ধীরে ধীরে ধীরে
বও ওগো উতল হাওয়া,
পাঠ
ও পাঠভেদ:
ধীরে ধীরে ধীরে বও ওগো উতল হাওয়া,
নিশীথরাতের বাঁশি বাজে— শান্ত হও গো, শান্ত হও॥
আমি প্রদীপশিখা তোমার লাগি ভয়ে ভয়ে একা জাগি,
মনের কথা কানে কানে মৃদু মৃদু কও ॥
তোমার দূরের গাথা তোমার বনের বাণী
ঘরের কোণে দেহো আনি।
আমার কিছু কথা আছে ভোরের বেলার তারার কাছে,
সেই কথাটি তোমার কানে চুপি চুপি লও ॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
পাঠভেদ:
স্বরবিতান
ষষ্ঠ (৬,
বসন্ত) খণ্ডের (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ)
পাঠভেদ অংশে এই গানটির একটি পাঠভেদ দেয়া আছে-
ধীরে ধীরে ধীরে
বও ওগো উতল হাওয়া
মনের কথা
কানে কানে
মৃদু মৃদু কও
:
নাট্য, বসন্ত
কথার অংশ, বসন্ত (১৩৩০)
মনের কথা
কানে কানে
চুপি চুপি
কও
: স্বরলিপি, বসন্ত (১৩৩০)
তোমার দূরের গাথা
তোমার
বনের বাণী
ঘরের কোণে দেহো
আনি
:
স্বরলিপি, বসন্ত (১৩৩০)
তোমার দূরের গাথা
তোমার
বনের বাণী
ঘরের কোণে দেহো
আনি
:
নাট্য, বসন্ত
গীতবিতান (আশ্বিন ১৩৩৮)
চারু বন্দোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত একটি চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গানটির ভাবার্থ তুলে ধরেন, যা নিম্নে বর্ণিত হল-
"তুমি যে গানটি পাঠিয়েছ সে গানে প্রদীপ শিখায় ও কবির চিত্তে কোন প্রভেদ আছে বলে মনে করি নে। উতল হাওয়া যাকে বলা হচ্চে সেও একান্ত বায়ব্য পদার্থ না হতে পারে। অবশ্য ব্যাপারটা আত্মজীবনীর একাংশ নয়। মানুষের একটা কাল্পনিক আত্মজীবনী আছে,সেখানে তার নানা অনুভূতির অবাস্তব লীলা। এ না থাকলে কেবলমাত্র কবিজীবনীর সংকীর্ণ পথ অনুসরণ করে গীতিকাব্য লেখা অসম্ভব। অন্তরে অনেকবার যে সব ভাব নানা উপলক্ষ্যে ভাবিত হয়েচে, বিস্মৃত হয়েচে, প্রেতশরীরীর মতো তারা ঘুরে বেড়ায় মনের কোণে কোণে, তাদের সূক্ষ্ম সত্তা নিয়ে। এই সূক্ষ্মতাবশতই বিবিধ রূপ দিয়ে তাদের আবদ্ধ করা সহজ। প্রদীপ শিখার সঙ্গে ভোরবেলাকার তারার স্বাভাবিক সখীত্ব। উভয়েরই জীবনের চরম কথাটি সেই সময়ে আসন্ন আলোকে বিলীন হবে, অন্তিম মুহূর্তের জানাশোনা হবে দুজনের। সেই যে তাদের বাণী মরণ দূতের জন্য অপেক্ষা করচে―উতল হাওয়ার কানে কানে সেই কথাটি দেবার ইচ্ছা আছে শ্রীমতী দীপশিখার। অসম্পূর্ণ আকাঙ্ক্ষার অকথিত বাণীর বেদনা গান এ'কে বলা যায়। এ গান কত ঘরে কত কুণ্ঠিত হৃদয়ে বসন্ত নীশিথে গুঞ্জরিত হ'য়ে উঠচে―কবি তাকেই সুর দিয়েচে। যার প্রয়োজন সে এ'কে গ্রহণ করতে পারে, যার প্রয়োজন নেই সেও হয়তো দেখবে একটা দীর্ঘ নি:শ্বাস তারো মনের কোথায় অবরূদ্ধ হয়ে আছে।" (চিঠিপত্র, ১৪ খণ্ড, পৃষ্ঠা-১২২-১২৩)
তথ্যানুসন্ধান:
ক. রচনাকাল ও স্থান:
২১ মাঘ
১৩২৯ বঙ্গাব্দ [৪ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩]। শান্তিনিকেতন।
গানটি রবীন্দ্রনাথের ৬১
বৎসর
৯ মাস বয়সের রচনা।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ
ঋতু-উৎসব [বিশ্বভারতী। ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ। বসন্ত। দীপশিখার গান। পৃষ্ঠা ১১১-১১২] [নমুনা প্রথমাংশ, শেষাংশ]
গীতবিতান-এর প্রকৃতি (উপ-বিভাগ : বসন্ত ৩০) পর্যায়ের ২১৭ সংখ্যক গান।
স্বরবিতান ষষ্ঠ (৬, বসন্ত) খণ্ডের (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ) ৫ সংখ্যক গান। বাণী অংশ : পৃষ্ঠা ১৫। স্বরলিপি অংশ : পৃষ্ঠা ৪৩-৪৪।
পত্রিকা:
পরিবেশনা: ১৩৩৫ বঙ্গাব্দে শান্তিনিকেতনে অনুষ্ঠিত 'বসন্তোৎসব'-এ গানটি পরিবেশিত হয়।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরলিপিকার:
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
[স্বরবিতান
ষষ্ঠ (৬,
বসন্ত) খণ্ড (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ)]
সুর ও তাল:
রাগ: ইমন। তাল: কাহারবা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই ২০০১, পৃষ্ঠা: ১০৫।]
গ্রহস্বর- র্সা।
লয়- ধীর।