হে মোর চিত্ত, পুণ্য তীর্থে জাগো রে ধীরে
এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে।
হেথায় দাঁড়ায়ে দু বাহু বাড়ায়ে নমি নরদেবতারে—
উদার ছন্দে, পরমানন্দে বন্দন করি তাঁরে।
ধ্যানগম্ভীর এই-যে ভূধর, নদী-জপমালা-ধৃত প্রান্তর,
হেথায় নিত্য হেরো পবিত্র ধরিত্রীরে—
এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে॥
কেহ নাহি জানে কার আহ্বানে কত মানুষের ধারা
দুর্বার স্রোতে এল কোথা হতে, সমুদ্রে হল হারা।
হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড় চীন—
শক-হুন-দল পাঠান-মোগল এক দেহে হল লীন।
পশ্চিমে আজি খুলিয়াছে দ্বার, সেথা হতে সবে আনে উপহার,
দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে—
এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে॥
এসো হে আর্য, এসো অনার্য, হিন্দু-মুসলমান।
এসো এসো আজ তুমি ইংরাজ, এসো এসো খৃস্টান।
এসো ব্রাহ্মণ, শুচি করি মন ধরো হাত সবাকার।
এসো হে পতিত, হোক অপনীত সব অপমানভার।
মার অভিষেকে এসো এসো ত্বরা, মঙ্গলঘট হয় নি যে ভরা
সবার-পরশে-পবিত্র-করা তীর্থনীরে—
আজি ভারতের মহামানবের সাগরতীরে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: পাওয়া যায়নি।
পাঠভেদ: গীতাঞ্জলি-এ গৃহীত ১০৬ সংখ্যক গানটি বেশ দীর্ঘ। মূল গানটি ৬ স্তবক বিশিষ্ট। এর ভিতর থেকে প্রথম দুটি এবং শেষ স্তবকে সুরারোপ করে গান হিসাবে স্বরবিতানে গৃহীত হয়েছে।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: ১৮ আষাঢ় ১৩১৭। বোলপুর। গানটি রবীন্দ্রনাথের ৪৯ বৎসর ২ মাস বয়সের রচনা।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২), পর্যায়: স্বদেশ ১৫, পৃষ্ঠা: । [নমুনা]
গীতাঞ্জলি (শ্রাবণ ১৩১৭, বঙ্গাব্দ)। ১০৬ সংখ্যক গান।
সঙ্গীত-গীতাঞ্জলি (১৯২৭ খ্রীষ্টাব্দ)। ভীমরাও শাস্ত্রী-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
ভারততীর্থ (শ্রাবণ ১৩৫৪, বঙ্গাব্দ)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
স্বরবিতান সপ্তচত্বারিংশ (৪৭) খণ্ড (বিশ্বভারতী, ), গান সংখ্যা: ২৬, পৃষ্ঠা ১০১-১০৬।
পত্রিকা:
প্রবাসী (শ্রাবণ, ১৩১৭ বঙ্গাব্দ)। শিরোনাম- মাতৃ-অভিষেক।
রেকর্ডসূত্র:
প্রকাশের
কালানুক্রম: গানটি
রবীন্দ্রনাথের
৪৯
বৎসর ৩
মাস বয়সে
প্রকাশিত হয়েছিল।
গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপি: [স্বরলিপি]
স্বরলিপিকার: ভীমরাও শাস্ত্রী।
সুর ও তাল:
স্বরবিতান সপ্তচত্বারিংশ (৪৭) খণ্ডে (বিশ্বভারতী, ) গৃহীত গানটির স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৩।৩ মাত্রা ছন্দে 'দাদরা' তালে নিবদ্ধ।
রাগ : শঙ্করা। তাল : দাদরা। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা: ৮৫।
রাগ: বিভাস (বাংলা)। তাল: দাদরা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা: ১৪৭।
বিষয়াঙ্গ:
সুরাঙ্গ:
গ্রহস্বর: র্সর্গা।
লয়: দ্রুত।