বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
কো তুঁহু বোলবি মোয়!
পাঠ ও পাঠভেদ:
কো তুঁহু বোলবি মোয়!
হৃদয়-মাহ মঝু জাগসি অনুখন, আঁখ-উপর তুঁহু রচলহি আসন,
অরুণ নয়ন তব মরমসঙে মম
নিমিখ ন অন্তর হোয়। কো তুঁহু বোলবি মোয়!
হৃদয়কমল তব চরণে টলমল, নয়নযুগল মম উছলে ছলছল,
প্রেমপূর্ণ তনু পুলকে ঢলঢল
চাহে মিলাইতে তোয়!
কো তুঁহু বোলবি মোয়!
বাঁশরিধ্বনি তুহ অমিয় গরল রে, হৃদয় বিদারয়ি হৃদয় হরল রে,
আকুল কাকলি ভুবন ভরল রে,
উতল প্রাণ উতরোয়। কো তুঁহু বোলবি মোয়!
হেরি হাসি তব মধুঋতু ধাওল, শুনয়ি বাঁশি তব পিককুল গাওল,
বিকল ভ্রমরসম ত্রিভুবন আওল
চরণকমলযুগ ছোঁয়। কো তুঁহু বোলবি মোয়!
গোপবধুজন বিকশিতযৌবন, পুলকিত যমুনা, মুকুলিত উপবন,
নীল নীর-’পর ধীর সমীরণ,
পলকে প্রাণমন খোয়। কো তুঁহু বোলবি মোয়!
তৃষিত আঁখি তব মুখ-’পরে বিহরই, মধুর পরশ তব রাধা শিহরই,
প্রেমরতন ভরি হৃদয় প্রাণ লই
পদতলে অপনা থোয়। কো তুঁহু বোলবি মোয়!
‘কো তুঁহু’ ‘কো তুঁহু’ সবজন পুছয়ি, অনুদিন সঘন নয়নজল মুছয়ি।
যাচে ভানু সব সংশয় ঘুছয়ি—
জনম চরণ
’পর গোয়।
কো তুঁহু বোলবি মোয়॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয়, গানটি পত্রিকা প্রকাশের কিছু আগে রচিত হয়েছিল। এই বিচারে বলা যায়, গানটি রবীন্দ্রনাথের ২৪ বৎসর বয়সের রচনা।
কড়ি ও কোমল (১২৯৩ বঙ্গাব্দ)।
ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী । ২০তম। [রবীন্দ্ররচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড। বিশ্বভারতী (শ্রাবণ ১৩৯১)। পৃষ্ঠা ২৬।]
বাঙালির গান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৬৯, ইমনকল্যাণ-একতালা। দুর্গাদাস লাহিড়ি সম্পাদিত (১৩১২)।
পত্রিকা:
প্রচার পত্রিকা (ফাল্গুন-চৈত্র ১২৯২ বঙ্গাব্দ)।
প্রকাশের
কালানুক্রম:
গানটি
প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল
প্রচার
পত্রিকার
ফাল্গুন-চৈত্র
১২৯২ বঙ্গাব্দ
সংখ্যায়। এরপর
কড়ি
ও কোমল (১২৯৩
বঙ্গাব্দ)-এ গানটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে এই গানটি
কড়ি
ও কোমল থেকে বর্জিত হয়।
বর্তমানে
ভানুসিংহ
ঠাকুরের পদাবলী
নামক গ্রন্থেই গানটি পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ যখন সঞ্চয়িতা নামক
কাব্য-সংকলন প্রকাশ করেন, তখন তার ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন—
'এই গ্রন্থের মাত্র দুইটি কবিতা ('মরণ রে তুঁহু মম শ্যামসমান' ও 'কোঁ তুঁহু বোলবি
মোয়') স্বীকারযোগ্য।'
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
সুর ও তাল:
রাগ: ইমনকল্যাণ। তাল: একতালা। স্বরলিপি নাই [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত। প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১। পৃষ্ঠা: ৮৫।]