বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
হৃদয়ক সাধ মিশাওল হৃদয়ে
পাঠ ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান
(বিশ্বভারতী,
কার্তিক ১৪১২)-এর
পাঠ:
ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী
:
৩
হৃদয়ক সাধ মিশাওল হৃদয়ে, কণ্ঠে শুখাওল মালা।
বিরহবিষে দহি বহি গল রয়নী, নহি নহি আওল কালা॥
বুঝনু বুঝনু, সখি, বিফল বিফল সব,
বিফল এ পীরিতি লেহা—
বিফল রে এ মঝু জীবন যৌবন, বিফল রে এ মঝু দেহা॥
চল সখি গৃহ চল, মুঞ্চ নয়নজল—
চল সখি, চল গৃহকাজে।
মালতিমালা রাখহ বালা,
— ছি ছি সখি, মরু মরু লাজে।
সখি লো, দারুণ আধিভরাতুর
এ তরুণ যৌবন মোর।
সখি লো, দারুণ প্রণয়হলাহল জীবন করল অঘোর॥
তৃষিত প্রাণ মম দিবসযামিনী শ্যামক দরশন আশে।
আকুল জীবন থেহ ন মানে,
অহরহ জ্বলত হুতাশে।
সজনি, সত্য কহি তোয়,
খোয়ব কব হম শ্যামক প্রেম সদা ডর লাগয় মোয়॥
হিয়ে হিয়ে অব রাখত মাধব,
সো দিন আসব সখি রে—
বাত ন বোলবে, বদন ন হেরবে,
মরিব হলাহল ভখি রে।
ঐস বৃথা ভয় না কর বালা,
ভানু নিবেদয় চরণে—
সুজনক পীরিতি নৌতুন নিতি নিতি,
নাহি টুটে জীবনমরণে॥
-
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
পাওয়া যায়নি।
-
পাঠভেদ:
-
সরলার্থ:
হৃদয়ের বাসনা হৃদয়েই মিলিয়ে
গেল, কণ্ঠের মালা শুকিয়ে গেল। বিরহযন্ত্রণায় জ্বলে-পুড়ে রাত্রি অতিবাহিত হলো,
কিন্তু কৃষ্ণ এলো না। বুঝলাম সখি সবকিছু বিফল হল, বিফল হলো প্রেমাদর বাসনা।
বিফল হলো আমার জীবন-যৌবন, বিফল হলো এ দেহ ধারণ। চল সখী, চোখের জল ফেলে ঘরের
কাজে ফিরে যাই। রেখে দাও মালতিমালা। ছি ছি লজ্জায় মরে যাই। হে সখি, দারুণ
পরিপূর্ণ আমার এ তরুণ যৌবনকাল। হে সখী, দারণ প্রণয়বিষে আমার জীবন দুর্বিসহ হলো।
তৃষ্ণার্ত আমার মন-প্রাণ দিবারাত্রি কৃষ্ণকে দেখার আশায় কাটে। অস্থির জীবনে
স্থিরতা আসে না। সারাক্ষণ হতাশার আগুনে জ্বলছে।
সখি, সত্যি কথা বলি তোকে, কবে আমি শ্যামের ভালোবাসা হারবো, সবসময়এই ভয় লাগে।
এখন কৃষ্ণকে হৃদয়ে ধরে রাখব, হয়তো এমন দিন আসবে, সে কথা বলবে না, চোখের দেখা
দেখাবে না, তখন বিষ পান করে মরে যাব। ভানু রাধার চরণে নিবেদন করে বলে, ঐসব ভয়
করো না হে বালিকা। সুজনের প্রেম নিত্য নতুন, জীবন মরণে তা ছিন্ন হয় না।
-
তথ্যানুসন্ধান
-
ক. রচনাকাল ও স্থান: সুনির্দিষ্টভাবে
জানা যায় না।
১২৯১ বঙ্গাব্দের ১৮
আষাঢ় তারিখে প্রকাশিত হয় ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী গ্রন্থটি।
ভারতী
পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত
১৩টি
কবিতা ও নতুন ৮টি কবিতা নিয়ে—
১২৯১ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে যে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল, তার নাম দেওয়া হয়েছিল
ভানুসিংহ
ঠাকুরের পদাবলী।
এই
গ্রন্থটির প্রকাশকালে রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল- ২৩ বৎসর ২ মাস। আলোচ্য গানটি
এই গ্রন্থেই প্রথম প্রকাশিত হয়।
-
খ.
প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
-
গ্রন্থ:
-
কাব্যগ্রন্থ প্রথম খণ্ড
(ইন্ডিয়ান প্রেস ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দ)। ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী ৩।
পৃষ্ঠা: ৩৩০-৩৩১।
-
কাব্যগ্রন্থাবলী
[আদি ব্রাহ্মসমাজ প্রেস, ১৩০৩। কৈশোরক।
ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী।
শিরোনাম 'বিফল রজনী'। পৃষ্ঠা: ১৯-২০] [নমুনা
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
গীতবিতান
-
অখণ্ড,
তৃতীয়
সংস্করণ
(বিশ্বভারতী,
কার্তিক ১৪১২),
পর্যায়:
ভানুসিংহ ঠাকুরের
পদাবলী ৩,
পৃষ্ঠা: । [নমুনা]
-
ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী
-
প্রকাশক
রবীন্দ্রনাথ, আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, ১২৯১ বঙ্গাব্দ)। ললিত। পৃষ্ঠা:
৬-৮। [নমুনা
৬,
৭,
৮]
-
রবীন্দ্ররচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড।
বিশ্বভারতী (শ্রাবণ ১৩৪৬)।
৩ সংখ্যক পদ।
পৃষ্ঠা ৬-৭।]
-
স্বরবিতান একবিংশ
খণ্ডের (২১, ভানুসিংহের পদাবলী, মুদ্রণ : মাঘ ১৪১৫)
অষ্টম গান। পৃষ্ঠা ২৯-৩২।
[নমুনা]
-
রেকর্ডসূত্র:
-
প্রকাশের
কালানুক্রম:
-
গ.
সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলি:
-
স্বরলিপি:
[স্বরলিপি]
-
স্বরলিপিকার:
ইন্দিরাদেবী
চৌধুরানী।
-
সুর
ও
তাল:
-
স্বরবিতান একবিংশ
(২১, ভানুসিংহ
ঠাকুরের পদাবলী) খণ্ড (শ্রাবণ ১৪০৬) এই গানটির স্বরলিপির সাথে
রাগ-তালের উল্লেখ নেই। গানটি ৪।৪।৪।৪। মাত্রা ছন্দে
ত্রিতাল-এ
নিবদ্ধ।
[নমুনা]
-
ললিত
[ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী, আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, ১২৯১
বঙ্গাব্দ], পৃষ্ঠা: ৬-৮।
-
রাগ : ভৈরব।
[রবীন্দ্রসঙ্গীতে রাগ-নির্ণয়। ভি.ভি. ওয়াঝলওয়ার।
রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান ।সংগীত-শিক্ষায়তন। বৈশাখ ১৩৯০।
পৃষ্ঠা : ৮১]
-
রাগ :
ভৈরব। কীর্তন। তাল :
ত্রিতাল। [রবীন্দ্রসংগীত:
রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬],
পৃষ্ঠা:
৮৪।
-
রাগ:
যোগিয়া।
তাল: ত্রিতাল। [রাগরাগিণীর
এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ
রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১],
পৃষ্ঠা:
১৪৬।
-
বিষয়াঙ্গ:
পদাবলি।
-
সুরাঙ্গ:
কীর্ত্তন।
-
গ্রহস্বর: সা।
-
লয়: মধ্য।