বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
বঁধুয়া, হিয়া’পর আও রে
পাঠ ও পাঠভেদ: গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২)-এর পাঠ: ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী ৬।
৬
বঁধুয়া, হিয়া’পর আও রে!
মিঠি মিঠি হাসয়ি, মৃদু মধু ভাষয়ি, হমার মুখ-’পর চাও রে!
যুগ-যুগ-সম কত দিবস ভেল
গত,
শ্যাম, তু আওলি না—
চন্দ-উজর মধু-মধুর কুঞ্জ-’পর মুরলি বজাওলি না!
লয়ি গলি সাথ বয়ানক হাস রে, লয়ি গলি নয়ন-আনন্দ!
শূন্য কুঞ্জবন, শূন্য হৃদয় মন, কঁহি তব ও মুখচন্দ!
ইথি ছিল আকুল গোপনয়নজল, কথি ছিল ও তব হাসি!
ইতি ছিল নীরব বংশীবটতট, কথি ছিল ও তব বাঁশি!
তুঝ মুখ চাহয়ি শতযুগভর দুখ ক্ষণে ভেল অবসান।
লেশ হাসি তুঝ দূর করল রে, বিপুল
খেদ-অভিমান।
ধন্য ধন্য রে, ভানু গাহিছে, প্রেমক নাহিক ওর।
হরখে পুলকিত জগত-চরাচর দুঁহুঁক প্রেমরস-ভোর॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি পাঠ পাওয়া যায় নি।
পাঠভেদ: গীতবিতানে গৃহীত পাঠের সাথে রবীন্দ্ররচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ডে গৃহীত পাঠের পার্থক্য রয়েছে।
সরলার্থ: বঁধুয়া, আমার হৃদয়ে এসো। মিষ্টি মিষ্টি হেসে, কোমল মধুর কথা বলে. আমার মুখপানে চাও। যুগ-সম কত দিন চলে গেল, শ্যম তুই এলি না। চন্দ্রালোকিত মধুর এই কুঞ্জে বাঙশি বাজালি না। নিয়ে গেলি মুখের হাসি, নিয়ে গেলি দেখার আনন্দ। (এখন) শূন্য কুঞ্জ, শূন্য হৃদয়-মন, কোথায় তোর ওই মুখচন্দ্র। এখানে ছিল আকুল গোপের (গোপ জাতি) নয়নজল, কোথায় ছিল তোর হাসি। এখানে ছিল নীরব বংশীবাদিত নীরব বটতল, কোথা ছিল তোর বাঁশি। তোর মুখপানে চেয়ে শতযুগের দুখ মুহূর্তে দূর হয়ে গেল। তোর সামান্য হাসিতে দূর করে দিলি বিপুল আক্ষেপ-অভিমান। ধন্য ধন্য বলে ভানু গাহিছে, প্রেমের সীমা নাই। আন্দে পুলকিত জগত-চরাচর দুজনের প্রেমরসের পূর্ণতায়।
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: গানটির
রচনাকাল
সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না।
১২৯১ বঙ্গাব্দের ১৮
আষাঢ় তারিখে প্রকাশিত হয় ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী গ্রন্থটি।
ভারতী
পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত
১৩টি
কবিতা ও নতুন ৮টি কবিতা নিয়ে-
১২৯১ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে যে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল, তার নাম দেওয়া হয়েছিল
ভানুসিংহ
ঠাকুরের পদাবলী।
এই
গ্রন্থটির প্রকাশকালে রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল- ২৩ বৎসর ২ মাস। আলোচ্য গানটি
এই গ্রন্থেই প্রথম প্রকাশিত হয়।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী: গানটির সুর পাওয়া যায় নি।