মথুরা
সংস্কৃত মধুপুরী>মধুরা> মৈথিলি মথুরা>বাংলা মধুরা।
ভারতের অন্যতম তীর্থস্থান। ভারতের উত্তর প্রদেশের মথুরা জেলাসদর, যমুনা নদীর তীরে
অবস্থিত। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে- রাজা কংসের রাজধানী ছিল।
কংসের কারাগারে কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
এই নগরীর উৎপত্তি হিসাবে রামায়ণে যে কাহিনি পাওয়া যায়, তা হলো- সত্যযুগে
মধু নামক একটি মহাশক্তিধর দৈত্য ছিল। তাঁর ভক্তিতে তুষ্ট হয়ে মহাদেব নিজের
ত্রিশূলের অনুরূপ একটি শূল প্রদান করেন। কিন্তু মহাদেব এই অস্ত্র প্রদানের
পূর্বে একটি শর্ত দিয়ে বলেন- যতদিন মধু দেবতা ও ব্রাহ্মণদের বিরোধিতা না
করবে, ততদিন তাকে কেউ আক্রমণ করলে- ওই শূল তাকে রক্ষা করবে। মধু পুনরায় এই
শূল তার উত্তরাধিকারদেরও অধিকারে থাকবে এমন প্রার্থনা করলে- মহাদেব শুধু
তাঁর এক পুত্রকে দেবার অধিকার প্রদান করেন। পরবর্তী কালে মধুর ঔরসে
কুম্ভনসীর গর্ভে একটি পুত্রের জন্ম হয়। এর নাম রাখা হয় লবণ। যথারীতি মধু
মৃত্যুকালে লবণের হাতে এই শূল অর্পণ করেন। কালক্রমে মধু অত্যন্ত অত্যাচারী
হয়ে উঠে এবং বন্য প্রাণীদের সাথে মানুষ খাওয়া শুরু করে। ফলে লবণের হাত থেকে
রক্ষা পাওয়ার জন্য- ঋষিরা রামের শরণাপন্ন হন। রাম এই দৈত্যকে হত্যা করার
জন্য ভরতকে আদেশ করেন। কিন্তু তাঁর অপর ভাই শত্রুঘ্ন এই দৈত্যকে হত্যা করা
আবেদন করেন। পরে রাম এতে সম্মতি প্রদান করেন এবং শত্রুঘ্নকে যুদ্ধের
উপযুক্ত করে- একটি শর প্রদান করেন। উল্লেখ্য এই শর দিয়ে বিষ্ণু মধু-কৈটভকে
হত্যা করেছিলেন। এরপর রাম মহাদেবের দেওয়া শূলের কথা বলেন এবং কিভাবে এই
শূলকে এড়িয়ে যুদ্ধ করতে হবে, তার পরামর্শ দেন। পরে শত্রুঘ্ন লবণকে হত্যা
করে মানুষের বসবাসের উপযোগী একটি নগরী স্থাপন করেন এবং এর নামকরণ করেন মধুপুরী। কালক্রমে এই নাম মধুরা নামে পরিচিত হয়ে উঠে।
[সূত্র : একষষ্টিতম- সপ্ততিতম সর্গ, উত্তরকাণ্ড। বাল্মীকি রামায়ণ। (মাঘ
১৪০১)]
মথুরায় (মথুরা +য়)
অর্থ: মথুরাতে, মথুরা নগরীতে।
উদাহরণ:
নিঠুর শ্যাম রে, কৈসন অব তুঁহ রহই দূর মথুরায়—
[ভানুসিংহ
ঠাকুরের পদাবলী (গীতবিতান) ৪।৯]