বিষয়:
রজনীকান্ত সেনের গান।
গান সংখ্যা: ১৫৫
শিরোনাম: তুমি, নির্ম্মল কর
ভৈরবী-জলদ একতালা
তুমি, নির্ম্মল কর, মঙ্গল-করে
মলিন মর্ম্ম মুছায়ে,
তব, পুণ্যকিরণ দিয়ে যাক্, মোর
মোহ-কালিমা ঘুচায়ে।
লক্ষ্য-শূন্য লক্ষ বাসনা
ছুটিছে গভীর আঁধারে,
জানি না কখন্ ডুবে যাবে কোন্
অকূল-গরল-পাথারে!
প্রভু, বিশ্ববিপদহন্তা,
তুমি, দাঁড়াও রুধিয়া পন্থা,
তব শ্রীচরণতলে নিয়ে এস, মোর
মত্ত-বাসনা গুছায়ে।
আছ, অনল-অনিলে, চিরনভনীলে,
ভূধরসলিলে, গহনে,
আছ, বিটপিলতায়, জলদের গায়,
শশিতারকায় তপনে,
আমি, নয়নে বসন বাঁধিয়া,
ব’সে, আঁধারে মরিগো কাঁদিয়া,
আমি, দেখি নাই কিছু, বুঝি নাই কিছু,
দাও হে দেখায়ে বুঝায়ে!
ভাবসন্ধান: এই গানে কবি স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করছেন, যেনো তিনি তাঁর মঙ্গল স্পর্শে মনের সকল মোহ-কালিমাকে মুছে দিয়ে নির্মল করে তোলেন। নানাবিধ মোহ এবং প্রলোভনে পড়ে অন্ধকারময় পাপপঙ্কিল বিষতুল্য সমুদ্রের দিকে মানুষ ছুটে চলে। কিন্তু বিশ্বরাজ সকল বিপদের রক্ষাকারী। তিনি বিপথগামীর পথ রুদ্ধ করেন দাঁড়ান। তেমনি করে কবিকেও মোহ কালিমার পথ রুদ্ধ করে, সুপথে নেয়ে আসবে, স্রষ্টার কাছে কবির একান্ত কামনা।
সঞ্চারীতে স্রষ্টাতে দেখেছেন সর্বত্রবিরাজমান সত্তা হিসেবে। তিনি আগুনে, বাতাসে, সুবিস্তৃত শাশ্বত নীলাকাশে, পৃথিবী, জলে, জঙ্গলে, বৃক্ষলতায়, মেঘে, গ্রহ-নক্ষত্রে। সকল দিক আলোকিত করে যে স্রষ্টা বিরাজমান, কবি তাকে উপলব্ধি করতে পারেন, কারণে তাঁর দৃষ্টি অজ্ঞানের কাপড় বাঁধা। কবি এই অক্ষমতা উপলব্ধি করে, স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করছেন দৃষ্টি দানের।
রাগ : ভৈরবী
তাল: জলদ একতাল।