বিষয়:
রজনীকান্ত সেনের গান।
গান সংখ্যা: ১৬৫
শিরোনাম: তোর ঘরের পানে তাকা
বাউলের সুর-গড় খেম্টা
তোর ঘরের পানে তাকা;
এটা কফ্ভরা রুমালের মত,
বাইরে একটু আতর-মাখা।
বহুশাস্ত্র বারিধি, কালচাঁদ বিদ্যোনিধি,
নিবারণ মাইতির সঙ্গে কচ্ছেন তর্কফাঁকা,
মাইতি বলে, 'মুরগী ভাল', শাস্ত্রী বলে 'ধর্ম্ম গেল,'
(আবার) আঁধার হ'লে দুজন মিলে,
হোটেলে হ'লেন গা' ঢাকা!
অথর্ব্ব বুড়োর সনে, সাত বছরের ক'নে,
বিয়ে দেয় নিঠুর বাপে, হাতিয়ে কিছু টাকা;
(আবার) এম্নি কিছু মোহ তঙ্কার, যে দু'শ শাস্ত্রী, বিদ্যালঙ্কার,
সেই বিয়ের মন্ত্র পড়ায়
উড়িয়ে টিকি জয়-পতাকা!
না যেতে বাসিবিয়ে, মেয়ের যায় সব ফুরিয়ে,
মোছে কপালের সিঁদুর, ভাঙ্গে হাতের শাঁখা;
(তখন) মিলে সব শাস্ত্রীবর্গ, হেসে করান বৃষোৎসর্গ,
মেয়েটির একাদশীর সুব্যবস্থা করেন পাকা।
সে একাদশীর রেতে, মরে জল-পিপাসাতে,
বোকা বাপ্ দাঁড়িয়ে দেখে, মাথায় হাঁকায় পাখা;
(আবার) ব'সে সেই মেয়ের পাশে, অন্ন গেলে গ্রাসে গ্রাসে,
সমাজের নাই চেতনা, অন্ধ, বধির, মিথ্যে ডাকা।
পাড়াগাঁয় দলাদলি, শুধু কানমলামলি,
'ভাইপো'কে রাগের চোটে, শালা বলেন কাকা;
(আবার) পেলে একটু দোষের গন্ধ, অম্নি ধোপা নাপিত বন্ধ,
এঁরাই আবার সভায় বলেন, 'উচিত মিলে মিশে থাকা!'
পুরোহিত পূজোয় ব'সে মন্ত্র আওড়াচ্ছে ক'সে
গায়েতে নামাবলী, প্রাণে লুচির ঝাঁকা;
(আবার) বাইরে ব'সে নব্য হিন্দু গণ্ডুষ কচ্ছেন মদ্যসিন্ধু,
ধর্ম্মে বিশ্বাস নাই একবিন্দু, শুধু কৌলিক বজায় রাখা।
কান্ত কয় কইব কত, এরাই দেশহিতে রত,
এটা যে গাড়ীর মতো, কাদায় ডুব্ল চাকা,
এরা, ঘুমিয়েছিল উঠ্লো জেগে,
চাকা টান্তে গেল লেগে,
মরণের জন্যে যেমন কুম্ভকর্ণের হঠাৎ জাগা!