বিষয়: রজনীকান্ত সেনের গান।
গান সংখ্যা:
১৯৩
শিরোনাম: নীল সিন্ধু ওই গর্জ্জে


মিশ্র গৌরী
কাওয়ালী
নীল সিন্ধু ওই গর্জ্জে গভীর;
ভৈরব রাগ-মুখর করি’ তীর।
অতল-উচ্চ-চল-উর্ম্মি-মালশত

শুভ্র ফেন-যুত, রঙ্গ অধীর;
ভীতি-বিবর্দ্ধন, তাণ্ডব নর্ত্তন,
ভীম রোলে করি শ্রবণ বধির।
সিন্ধু কহে, “তব ভূমিখণ্ড কত
ক্ষুদ্র, হের মম বিপুল শরীর;
তীব্র হরষে মম অঙ্গ পরশে,
কি তরঙ্গ তুলিয়া, চির-সঙ্গী-সমীর।
রত্ন-রাজি কত, যত্ন-সুরক্ষিত,
সঞ্চিত কোষ লুব্‌ধ ধরণীর;
সার্থকতা লভে মুগ্ধ, তরঙ্গিণী,
আসি,’ পদে মিলি’, পতি জলধির!
(আনি) ইন্দ্রচাপ-নিভ-স্নিগ্ধ মনোহর
বর্ণে সুরঞ্জিত, কিরণে রবির;
পারিজাত তরু, অমৃত সুধাকর
মন্থনে তুলিল সুরাসুর বীর।
(কত) অর্ণবপোত পণ্য ভরি,’ ধাইছে,
কর্ণে সুপরিচিত নাবিক ধীর;
ভগ্ন-শেষ কত, করিছে প্রমাণিত
ধ্রুব-পরিহাস নিঠুর নিয়তির।
(যবে) অমৃত-ধারে ভরি’ পিতৃবক্ষ, হয়
উদয় মনোরম পূর্ণ শশীর;
মত্ত হরষে, যেন বীচি-হস্তে ধরি’,
আনি’ আলো করি হৃদয়-কুটীর
চন্দ্র-বিরহে পুনঃ উদ্বেলিত চিত,
আবৃত করে ঘন-দুঃখ-তিমির;
করি, সজ্জিত, সুন্দর, প্রচুর পুষ্প-ফল
শস্য-রাশি দিয়ে দেহ মহীর।
লক্ষ-পুরাতন-সন্ধি-সমর-ইতি

হাস বিমিশ্রিত এ বিপুল নীর;
দীনে দান কত করিনু অকাতরে,
সম্পদ লয়ে গর্ব্বিত নৃপতির।
(তব) শক্তিপুঞ্জ মম মূর্ত্তি হেরি’
হয় স্তম্ভিত, ভীত, পদানত শির;
সর্ব্ব গর্ব্ব মম যাঁর কৃপাবলে,
নমি সে সুমঙ্গল-পদে প্রভুজীর।”