বিষয়:
রজনীকান্ত সেনের গান।
গান সংখ্যা: ২৩৩
শিরোনাম: মান্ষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ
মিশ্র বিভাস-কাওয়ালী
মান্ষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সেই, যে পুরো পাঁচ হাত লম্বা;
সাধু সেই, যে পরের টাকা নিয়ে, দেখায় রম্ভা!
ধার্ম্মিক বটে সেই, যে দিন রাত ফোঁটা তিলক কাটে;
ভক্ত সেই, যে আজন্মকাল চৈতন নাহি ছাঁটে।
সেই মহাশয়, সংগোপনে যে মদ্টা আস্টা টানে;
নিষ্টাবান্ যে কুক্কুট-মাংসের মধুর আস্বাদ জানে।
রসিক সেই, যার ষাট্ বছরে আছে পঞ্চম পক্ষ,
সেই কাজের লোক, চব্বিশ ঘণ্টা হুকো যার উপলক্ষ।
সেই কপালে', বিয়ে ক'রে যে পায় বিশ হাজার পণ;
নারীর মধ্যে সেই সুখী যার কত্তে হয় না রন্ধন।
সেই নিরীহ, রামের কথা শ্যামের কাছে দেয় ব'লে;
সেই বাবু, যে কোঁচা হাতে জামায় ফুঁ দিয়ে চলে;
ভদ্র সেই, যার ফরসা ধুতি, ফুটফুটে যার জামা;
দেশহিতৈষী সেই, যার পায়ে "ডসনের" বিনামা।
মদ খেয়ে, যা' ভুলে থাক্তে হয় সেই আদত বিচ্ছেদ;
কালো ফিতে ধারণ আছে যার, তারেই বলি খেদ।
বেহুঁশ হয়ে ড্রেনে প'ড়ে রয়, সে অতি সম্ভ্রান্ত;
সাদা কালোয় ভেদ না রাখে, সে হাকিম কি ভ্রান্ত;
'এষ অর্ঘ্যাং' যে বলে সেই দশকর্ম্মাণ্বিত;
সেই বেদজ্ঞ, ফলারের নামে যে ভারি আনন্দিত।
'রাজ-লক্ষণ আছে আমার', যে কয়, সে জ্যোতিষী;
লম্বা-দাড়ী, গেরুয়াধারী, সেই ত আদত ঋষি;
'সট-সাইটেড্' চশমা নিলেই, বুঝবে ছোক্রা ভাল,
বাপকে যে কয় 'ঈডিয়ট্' তার গুণে বংশ আলো!
সেই গুরু, যিনি বৎসরান্তে আসেন বার্ষিক নিতে;
বদান্য যে একদম লাখ্ দেয়-উপাধি কিনিতে।
আসল তন্ত্রী সেই, যে সদাই আওড়ায় মুখে 'দ্রুম্ফট্';
সেই আদত বীর, সাহেব দেখলেই যে দেয় সোজা চম্পট!
সে কালের সব নিরেট বোকা এ সত্য কি জান্ত−
যে লেখক বল্লেই বুঝ্তে হবে, এই ধুরন্ধর 'কান্ত'?