বিষয়:
রজনীকান্ত সেনের গান।
গান সংখ্যা: ২৩৮
শিরোনাম: যদি, কুমড়োর মত
যদি, কুমড়োর মত, চালে ধ’রে র’ত,
পান্তোয়া শত শত;
আর, সরষের মত, হ’ত মিহিদানা
বুঁদিয়া বুটের মতো!
(প্রতি বিঘা বিশ মণ ক’রে ফ’ল্ত গো);
(আমি তুলে রাখিতাম); (বুঁদে মিহিদানা গোলা বেঁধে
আমি তুলে রাখিতাম);
(গোলা বেঁধে আমি তুলে রাখিতাম, বেচতাম না হে!)
(গোলায় চাবি দিয়ে চাবি কাছে রাখিতাম, বেচতাম না হে!)
যদি তালের মতন হ’ত ছানাবড়া,
ধানের মত চসি:
(আমি বুনে যে দিতাম); (ধানের মতো ছড়িয়ে ছড়িয়ে
বুনে যে দিতাম);
চ’সি এক কাঠা দিলে, দশ মণ হ’ত বুনে যে দিতাম।
আর, তরমুজ যদি, রসগোল্লা হ’ত
দেখে প্রাণ হত খুশি!
(আমি পাহারা দিতাম); (কুঁড়ে বেঁধে আমি পাহারা দিতাম);
(ক্ষেতে কুঁড়ে বেঁধে আমি পাহারা দিতাম);
(তামাক খেতাম আর পাহারা দিতাম); (ব’সে ব’সে
তামাক খেতাম আর পাহারা দিতাম); (সারা রাত
তামাক খেতাম আর পাহারা দিতাম); (খেঁকশিয়াল
আর চোর তাড়াতাম, পাহারা দিতাম)।
যেমন, সরোবর মাঝে, কমলের বনে,
কত শত পদ্ম-পাতা,
তেমনি, ক্ষীর-সরসীতে, শত শত লুচি,
যদি রেখে দিত ধাতা!
(আমি নেমে যে যেতাম); (ক্ষীর-সরোবর-ঘন-জলে আমি
নেমে যে যেতাম); (গামছা প’রে নেমে যে যেতাম);
(একটু চিনি যে নিতাম); (সেই চিনি ফেলে দিয়ে
ক্ষীর লুচি আমি মেখে যে খেতাম); (আহা মেখে যে খেতাম!)
যদি, বিলিতি কুম্ড়ো হ’ত লেডিকিনি
পটোলের মত পুলি;
(আর) পায়েসের গঙ্গা বয়ে যেত, পান
ক’র্ত্তাম দু-হাতে তুলি’।
(আমি ডুবে যে যেতাম); (সেই সুধা-তরঙ্গে ডুবে যে যেতাম)
(আর বেশী কি বল্ব, গিন্নীর কথা ভুলে, ডুবে যে যেতাম);
(আর উঠ্তাম না হে); (গিন্নী ডেকে ডেকে কেঁদে মর্তো,
তবু তো উঠ্তাম না হে; (গিন্নী হাতে ধ’রে ক’র্তো টানাটানি,
তবু উঠ্তাম না হে)।
সকলি ত’ হবে বিজ্ঞানের বলে,
নাহি অসম্ভব কর্ম্ম;
শুধু, এই খেদ, কান্ত আগে ম’রে যাবে,
(আর) হবে না মানব জন্ম।
(আর খেতে পাবে না); (কান্ত আর খেতে পাবে না);
(মানব জনম্ আর হবে না,−
খেতে পাবে না); (হয়তো, শিয়াল কি কুক্কুর হবে,
আর খেতে পাবে না); (আর সবাই খাবে গো তাকিয়ে
দেখ্বে, খেতে পাবে না); (ফ্যাল্ ফ্যাল্ ক’রে তাকিয়ে
রইবে, খেতে পাবে না); (সবাই তাড়াহুড়ো ক’রে
খেদিয়ে দেবে গো, খেতে পাবে না)।