বিষয়: সলিল চৌধুরীর গান
গান সংখ্যা: ৪৫
সেই মেয়ে

হয়তো তাকে দেখোনি কেউ,
কিংবা দেখে ছিলে,
ছিন্নশত আঁচল ঢেকে শীর্ণ দেহখানি
ক্লান্ত পায়ে পায়ে যেতে পথে
কি জানি কি ঝড়ে,
গেছে বুঝি ঝরে
জীবনের তরু থেকে,
তখন গগন ছড়ায় আগুন দারুণ তেজে---
সেই মেয়ে।
দুটি শীর্ণ বাহু তুলে,
ওসে ক্ষুধায় জ্বলে জ্বলে,
অন্ন মেগে মেগে ফেরে প্রাসাদ পানে চেয়ে
কে জানে হায় কোথায় বা ঘর
কী নাম কালো মেয়ের ॥

হয়তো বা সেই ময়নাপাড়ার মাঠের কালো মেয়ে---হয়তো বা
মেঘলা দিনের কবির স্বপ্নের ছবি সেই মেয়ে---হয়তো বা
জীবন নদীর খরস্রোতে ভাসা
মহাকালের জ্বলন্ত জিজ্ঞাসা
কেন কবির স্বপ্ন কুসুম বিফল হয়ে ঝরে?
হয়তো তাকেই কৃষ্ণকলি বলে কবিগুরু তুমি চিনেছিলে
কল্পলোকের মাধুরিমার কুসুম কে হায় গেল দলে?
হয়তো তাকে...চিনেছিলে ॥

তার দুটি কালো হরিণ চোখে চোখে,
শুধু বেদনার দহন ঝলকে
বাঁকা দুটি ভুরু ধনুর টঙ্কারে
আমি যে দেখেছি মরণ শঙ্কারে
ঘিরেছে নিঃসহায়ে।
হয়তো বা সেই ময়নাপাড়ার মাঠের কালো মেয়ে---হয়তো বা
মেঘলা দিনে কবির স্বপ্নের ছবি সেই মেয়ে---হয়তো বা ॥

আবার কোনো দিন যদি তুমি
তারে দেখো পথে,
(এ) বোলো তারে বোলো তারি তরে
ময়নাপাড়ার থেকে খবর আছে
তারি কাছে রে---
সে যেন ফিরে যায় রে। ॥

সেখানে গাছে গাছে
রাঙা ফুল ফুটিয়াছে,
রাঙা মেঘ রাঙায় কন্যার আশা।
পৌষালির মাঠে মাঠে, ॥

সোনালি ফসল কাটে
গড়বেই নতুন জীবনের বাসা।
আহা, বুঝি কবি কবিতা তোমারি
নতুন ছন্দে হবে গাঁথা,
এ বারতা তারি তরে,
সে যেন ফিরে যায় রে ॥