বিষয়: সলিল চৌধুরীর গান
গান সংখ্যা: ৩৭৩
চলচ্চিত্রের গান

ও আমি আনেক ঘুরিয়া ফিরিয়া শ্যাষে
আইলামরে কইলকাত্তা।
এই আজব কলকাত্তা,
এর রকম সকম দেইখ্যা আমার ঘুইরা গ্যাছে মাথা।
আমি অনেক, ঘুরিয়া শ্যাষে আইলামরে কইলকাত্তা।

ঐ পদ্মাপারের চরে আমার ছিল রে ঘরবাড়ি,
আর ছিল মা জননী বিঘা দুই খেতি বাড়ি
আমি কী দোষে--- আমি কী দোষে হারাইলাম মাগো
আইলাম সবই ছাড়ি
এখন যেইখানে হক-কথা কই মা পিঠে পড়ে জুত্তা ॥

(হেতা) দুই পাশেতে সারি-সারি দুকান মণিহারি।
আর গাড়ি, বাড়ি, শাড়ির বাহার হরেক রকমারি।
লাখ্‌ বেলাখের---ওরে লাখ্‌-বেলাখের কেনা-বেচায়
চেঁচায়রে ব্যাপারি
আর নর্দমা খুইট্যা খায় মানুষ কাইন্দা মরে যে রে কুত্তা ॥

(এই) ইট কাঠে পাথরে গড়া শহর বড় ভারী
আর ঘড় ঘড়াইয়া টেরাম চলে, চলে হাওয়া গাড়ি
আর ঘেঁষাঘেঁষি---আর ঘেঁষাঘেঁষি, ঠ্যাসা ঠ্যাসী
রইছে নরনারী
তবু কার কড়ি কে ধারে, কেউ না রাখে কারও বার্তা ॥

(হেথা) চিমনিতে উড়াইয়া ধুঁয়া ভোঁ বাজাইয়া কলে।
ভোর না হইতে ডাকে মানুষ চলে দলে দলে।

আর খট্‌ খটাং খট্‌--- আর খট খটাং খট্‌ খটাস মেশিন
দিবানিশি চলে
আর ফুরাইলে কাম ফেইককে বাহিরা মাইরা তারে গোত্তা ॥

এই আজব কলকাত্তা, এর হাওড়ার পুল দেইখ্যা
আমার ঘুইরা গেছে মাথা।
(এই) এত গুলান বরগার সাথে মিলছে এ্যাত্তো কড়ি
(এই) লক্ষ কোটি মানুষেও যদি মিলতো এমন করি
এই জীবনের---ওরে এই জীবনের নদীর উপর সেতু
দিত গড়ি।
পার হইতাম জীবন হাইস্যা মরণ পাইত নারে পাত্তা ॥


তথ্যসূত্রঃ
  • সলিল চৌধুরী রচনা সংগ্রহ প্রথম খণ্ড, প্রথম প্রকাশ অগ্রহায়ণ ১৪২০, দে'জ পাবলিশিং, ১৩ বঙ্কিম চ্যাটার্জী স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০৭৩: পৃষ্ঠা ৩৪৭-৩৪৮