৬২৭
               তাল: দাদ্‌রা
আমার    হাতে কালি মুখে কালি, মা
আমার    কালি মাখা মুখ দেখে মা পাড়ার লোকে হাসে খালি॥
  মোর    লেখা পড়া হ'ল না মা,
  আমি    'ম' দেখতেই দেখি শ্যামা,
  আমি    'ক' দেখতেই কালী ব'লে নাচি দিয়ে করতালি॥
 কালো    আঁকা দেখে মা ধারাপাতের ধারা নামে আঁখি পাতে,
আমার    বর্ণ পরিচয় হ'লো না মা
            তোর বর্ণ বিনা কালী।
            যা লিখিস মা বনের পাতায়
            সাগর জলে আকাশ খাতায়,
  আমি    সে লেখা তো পড়তে পারি
            মূর্খ বলে দিক্ না গালি মা,
লোকে    মূর্খ ব'লে দিক্ না গালি॥
 

ভাবসন্ধান:
প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত বা প্রথাগত বিশ্বাসে দীক্ষিত না হওয়ায় পাড়ার লোকে, কবিকে মূর্খ, পাগল ভেবে হাসাহাসি করে। কিন্তু কবির অন্তর জুড়ে রয়েছে কালী। তাই প্রথাগতভাবে তাঁর বর্ণ পরিচয় না হলেও, তিনি 'ম' বর্ণের ভিতরে শ্যামাকে খুঁজে পান এবং 'ক' বর্ণের ভিতর কালীকে দেখতে পান এবং এই দর্শনে তাঁর হৃদ্য় পরমানন্দে নেচে উঠে। কবির চিত্তে গণিতের ধারাপাতের হিসাব প্রবেশ করে না, বরং কালী দর্শনের জন্য কবিচিত্ত উদ্বেলিত হয়ে উঠে। কবি প্রথাগতভাবে লিখতে পড়তে  পারেন না। কিন্তু কালী ভক্তির জোরে জগৎ জুড়ে তিনি কালীর মহিমা উপলব্ধি করতে পারেন। তাই লোকে তাঁকে মূর্খ বলে গালি দিলেও, তাতে তিনি ভ্রূক্ষেপ করেন না। বরং জগৎ সংসারের ভিতরে কালীকে উপলব্ধি করেন, এটাই তাঁর অহঙ্কার।

১. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:

২. রেকর্ড সূত্র :  ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে এইচ.এম.ভি. থেকে এই গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। রেকর্ড নম্বর: এন. ২৭২৬৫। শিল্পী ছিলেন কে. মল্লিক।

৩. রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। এইচ.এম.ভি. থেকে এই গানের রেকর্ড প্রকাশের সময়, কাজী নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪৩ বৎসর

৪. প্রাসঙ্গিক পাঠ :

৫.সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম।

৬. স্বরলিপি:

. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
তাল: দাদরা।
পর্যায়: শ্যামা সঙ্গীত।
অঙ্গ: রামপ্রসাদী সুর।
গ্রহস্বর: গা