৮৭৪.
রাগ: বাগেশ্রী, তাল: ত্রিতাল
মাগো চিন্ময়ী রূপ ধ’রে আয়। |
ভাবার্থ:
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে–
দুর্গা আদ্যা শক্তি। পৌরাণিক কাহিনী মতে মহিষাসুরের অত্যাচার এবং অনাচার থেকে জগৎকে
রক্ষার জন্য তার আবির্ভাব ঘটেছিল দুর্গতিনাশিনী রূপে। একই উদ্দেশ্যে প্রতি বৎসর সেই
আদ্যশক্তিকে আবাহন করা হয় দুর্গা পূজার মধ্য দিয়ে। মন্দিরে মন্দিরে এই দেবী পূজিতা
হন মাটির প্রতীকী মূর্তিতে। বিপুল আয়োজনে প্রতিবৎসর মহাসমারোহে পূজা হয় বটে, কিন্তু
জগতের দুর্গতি কাটে না। কবি মনে করেন, মৃন্ময়ীরূপে দেবীর এই আবির্ভাব জগতের জন্য
কল্যাণ বয়ে আনে না। তাই তিনি চিত্তমন্দিরে দেবীকে আবাহন করছেন। যেনো মানুষের
চৈতন্যের ভিতরে আদ্যশক্তি প্রকাশ ঘটে। যার চিন্ময়ীরূপের প্রভাবে প্রতিটি ভক্ত হয়ে
উঠতে পারে দুর্গতিনাশিনী শক্তি হিসেবে।
কবি মনে করেন আদ্য মহাশক্তির বিনাস নাই, যাকে ত্যাগও করা যায় না। চিত্তের বাইরে এবং
অন্তরে যার অনুক্ষণ প্রকাশ। তিনি মনে করেন মন্দিরে বন্দী দেবী দেশের দুর্গতি রোধে
অক্ষম। সেই মহাশক্তি সকলের অন্তরকে উদ্দীপ্ত করুক এবং সকলের ভিতর দিয়ে সংসারের
অকল্যাণকে ধ্বংস করুক। এর জন্য দশভুজা দুর্গার দরকার নেই। বরং দেশমাতৃকার প্রতিটি
সৈনিকের দুটি হাতেই দশভুজার শক্তি অধিষ্ঠিত হোক। মৃন্ময়ী দেবীর মধ্য দিয়ে যে
শক্তিপূজা করা হয়, তাতে ভক্তি প্রকাশ পায়। কিন্তু দেশের দুর্গতি দূর হয় না। ভক্ত কি
শুধু সেই ভক্তিতেই সন্তুষ্ট থাকবে? বিশ্বকে জয় করার সৌভাগ্য কি তার কপালে জুটবে না?
যে পূজার ভিতরে মাতৃরূপেণ দুর্গার ভক্তিটাই প্রধান হয়ে উঠে, তাতে সন্তানরা শক্তিহীন
হয়ে অন্যের দাসত্ব করে। সে পূজাকে কবি পূজা-বিলাস ছাড়া আর কিছু ভাবেন না। সেই
পূলাসকে সংহার করে, ভক্তরা হয়ে উঠুক চিন্ময়ীরূপী দুর্গার সৈনিক।
১. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট, মাঘ ১৪১৮/ফেব্রুয়ারি ২০১২] ৮৭৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ২৬৯।
২. রেকর্ড সূত্র:
৩.
রচনাকাল:
৪. প্রাসঙ্গিক পাঠ:
৫. সুরকার:
৬. স্বরলিপিকার:
৭. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী: