৮৮৫
        তাল: কাহার্‌বা

আমার যাবার সময় হলো, দাও বিদায়।
মোছ আঁখি, দুয়ার খোলো, দাও বিদায়॥

    ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে
    ঝরে ধূলায় ভোর বেলাতে
আমায় তারা ডাকে সাথে
আয় রে আয়।
সজল করুণ নয়ন তোলো, দাও বিদায়॥

অন্ধকারে এসেছিলাম থাকতে আঁধার যাই চ'লে;
ক্ষণিক ভালোবেসেছিলেম চিরকালের না-ই হ'লে।
    হ'লো চেনা হ'লো দেখা
    নয়ন-জলে রইলো লেখা
দূর বিরহের ডাকে কেকা বরষায়
ফাগুন স্বপন ভোলো ভোলো, দাও বিদায়॥

ভাবসন্ধান:
প্রেম পর্যায়ের গান। কোনো এক শুভক্ষণে প্রেমিক-প্রেমিকা পরস্পরের  সাথে প্রেমময় মধুর সময় অতিবাহিত করেছে। মিলনের প্রহর শেষে এসেছে বিদায়ের বেলা। এখন প্রেমিক এই বিচ্ছেদ-বেদনার অশ্রু মুছে ফেলে প্রেমিকার কাছে বিদায় প্রার্থনা করছে। প্রেমিক সান্ত্বনা দিয়ে বলছে, অন্ধকারে যে ফুল নীরবে প্রস্ফুটিত হয়, ভোর বেলায় সে তাঁর সকল সৌরভ-সৌন্দর্য নিয়ে মাটিতে ঝরে পড়ে। তাদের এই মিলনের ফুলও তেমনি। অন্ধকারে প্রেমিকার কাছে আসা আর ক্ষণিকের মিলনে যে আনন্দ বিকশিত হয়েছিল, প্রেমিকের কাছে তা দুর্লভ স্মৃতি। প্রেয়সীকে সে সান্ত্বনা দিয়ে বলছে, চিরকালের জন্য এই মিলন স্থায়ী না হলেও দুঃখ করার কিছু নেই। বরং এর ভেতর দিয়ে যে মধুর স্মৃতির জন্ম হবে, তা না হয় চোখের জলের ভিতর দিয়েই লেখা রইবে। কেকা যেমন দূর বিরহের আহ্বান বুকে নিয়ে বরষা অতিবাহিত করে, তেমনি বসন্তের স্বপ্নকে ভুলে গিয়ে হাসি মুখে বিদায় প্রার্থনা করছে প্রেমিক।

১. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:

২. রেকর্ড সূত্র :  ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে এইচ.এম.ভি. থেকে এই গানের রেকর্ড প্রকাশ হয়েছিল। রেকর্ড নম্বর- এন ৭৪৯৩। শিল্পী: আঙ্গুরবালা।

৩. রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। এইচ.এম.ভি. রেকর্ড কোম্পানীর সাথে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই সেপ্টেম্বর কাজী নজরুল ইসলামের যে গানের রেকর্ড-সংক্রান্ত চুক্তি হয়, সেখানে এই গানটির উল্লেখ ছিল। এই সময় তাঁর বয়স ছিল ৩৭ বৎসর।

৪. প্রাসঙ্গিক পাঠ:

৫.সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম।

৬. স্বরলিপি:

. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
তাল: কাহারবা।
পর্যায়: প্রেম (বিরহ)।
অঙ্গ: গজল।
গ্রহস্বর: র্সা।