১৯৭১ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
১৩ই এপ্রিল
রংপুর: রংপুর জেলারা পীরগঞ্জ উপজেলার নবীগঞ্জ নামক স্থানে পাকবাহিনী ১১ জন বাঙালি ইপিআর সদস্যকে হত্যা করে।
সিলেট: সিলেট শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের কালাগুল চা 
	বাগানে পাকিস্তানি সৈন্যরা হত্যাযজ্ঞ চালায়। সে সময় কালাগুল চা বাগানে যাওয়ার 
	রাস্তাটা খানিক দুর্গম ছিল। সেই কারণে এই এলাকাতেকে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়স্থল 
	হিসেবেই মনে করে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১৩ই এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা প্রথমে 
	ব্যবস্থাপকের বাংলোয় যায়। এবং সেখানে থেকে গুলি চালাতে থাকে। এই সময় প্রাণ 
	রক্ষার জন্যে বাগানের শ্রমিকরা পালাতে শুরু করলে, তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া 
	হয়। কেউ কেউ পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও, অনেকেই পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পরে। এরপর 
	এদের চোখ বেঁধে বাগানের পাশেই একটি কাঁঠাল গাছের তলায় জড়ো করা হয়। উল্লেখ্য, এই 
	জায়গাকে আগে থেকেই শ্রমিকরা ‘কাঠালতলি’ বলতো। পাকিস্তানি সৈন্যরা একে একে 
	সবাইকে সেখানে গুলি করে হত্যা করে। এদের মধ্যে ছিলেন কালোগুনা লোহার, কোষ 
	লোহার, সাধু বাউরি, তুফান লোহার, ভীম লোহার, মিঠাই লোহার-সহ অন্তত ১৫ জন। ঐদিনই 
	বাকি সবাই ভারতের দিকে রওনা হন।
	
	কালাগুল থেকে যাওয়ার পথে পাকিস্তানিরা আরও কিছু বাগানে শ্রমিকদের হত্যা করে। এই 
	সময় পাকিস্তানিরা দূরবর্তী গুলনী চা বাগান পর্যন্ত হত্যাযজ্ঞ চালায়। এখানে  
	কালাগুল চা বাগান থেকে পালিয়ে আসা গনেশ ছত্রী ও সিতারাম কুর্মিকে হত্যা করা হয়। 
	এই সময় চা-বাগানগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়। এই অভিযানে কালাগুল চা বাগান ও অন্যান্য 
	চা-বাগানের মেয়েদের হত্যার পরিবর্তে ধর্ষণ করা হয়।