বিজয় স্তম্ভ
বাংলাদেশের
ময়মনসিংহে জেলার শম্ভুগঞ্জের বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতুর কাছে স্থাপিত স্মৃতিসৌধ।
মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের স্মরণে এই স্তম্ভটি নির্মাণ করেছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন।
এই স্মৃতিসৌধের কেন্দ্রে রয়েছে একটি রাইফেল। রাইফেলের বেয়োনেটে ফুটন্ত শাপলা। ৫০
ফুট উঁচু স্তম্ভটি দাঁড়িয়ে আছে মশালের আকৃতিতে। সৌধটির চারদিকের চারটি দেয়ালে রয়েছে
চার রকমের মুর্যাল। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯’য়ের গণঅভ্যুত্থান
এবং ৭১’য়ের স্বাধীনতা সংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চার দেয়ালের
মুর্যালে। এর নকশা এবং পরিকল্পনা করেছিলেন ভাস্কর শ্যামল চৌধুরী।
সাতটি সোপানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি টেবিল ল্যাম্পের অবয়বে নির্মিত উজ্জ্বল
আলোকবর্তিকাসদৃশ স্মৃতিসৌধটির নকশা করেছিলেন রশীদ আহমেদ। প্রথম স্তম্ভের ছয়টি বলয়
ঐতিহাসিক ছয় দফার প্রতীক। বলয়ের ওপরে ত্রিকোণাকৃতি ৭১টি প্যানেলের মাধ্যমে একাত্তর
সালের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধকে বোঝানো হয়েছে। ত্রিকোণাকৃতি প্যানেলের ওপর স্থাপিত
সাতটি বলয় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের দিকনির্দেশনা।
২৬টি রাইফেল একাত্তরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের
প্রতীক। এরপর রয়েছে জাতীয় ফুল শাপলা, যা দিয়ে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের
প্রাপ্তিকে বোঝানো হয়েছে। সর্বশেষ স্মৃতিসৌধের চূড়ায় শোভা পাচ্ছে লাল
সূর্যখচিত সবুজ পতাকা, যা আমাদের চূড়ান্ত বিজয়, জাতীয় ঐক্য ও দেশপ্রেমের অঙ্গীকারকে
জানিয়ে দিচ্ছে।১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে
মে তৎকালীন মন্ত্রী মো. নাসিম ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। আর মূল
নির্মাণকাজ শুরু হয় সে বছরের ৫ই অক্টোবর। অর্ধকোটি টাকারও বেশি খরচে নির্মিত সৌধটি
উদ্বোধন করা হয় ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর।