বাংলাদেশের
রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত একটি স্মৃতিসৌধ।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪
ডিসেম্বর তারিখে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর বাহিনীর
সদস্যরা বহু বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। সে সব শহিদের স্মরণে এই স্মৃতিসৌধ তৈরি করা
হয়। শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৭১
খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছিল। এর
উদ্বোধন করেছিলেন, বঙ্গব্ন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর
এটি সম্প্রসারিত ও নবরূপে উদ্বোধন করা হয়।
এই স্মৃতিসৌধটি মিরপুরের প্রায় ১০০ একর জমির উপর নির্মিত হয়েছে। এর তিনটি
ত্রিভূজাকার দেয়াল ভিত্তিভূমি থেকে ক্রম-ঢালু হয়ে একটি বেদীর সাথে যুক্ত হয়েছে। এই
দেয়াল চারটি লাল ইটের তৈরি। সম্মুখের তিনটি দেয়ালের মধ্য রয়েছে দুই ভাগে বিভক্ত
সিঁড়ি। এই সিঁড়ির শেষ ধাপ যুক্ত হয়েছে স্মৃতি সৌধের চত্বর। এই চত্বরে রয়েছে একটি
গ্রানাইড পাথরে তৈরি বেদী। এর তলদেশে মার্বেল পাথরে আস্তরণ রয়েছে। বেদীর
প্রান্ত ঘেঁষে একটি ফলকে রবীন্দ্রনাথের কবিতা থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে–
"উদয়ের পথে শুনি কার বাণী
ভয় নাই ওরে ভায় নাই–
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।"
উল্লেখ্য এই স্মৃতিসৌধটি তৈরি করেছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকট বিভাগের
ছাত্ররা।
এই স্মৃতিসৌধের এক দিকে রয়েছে কিছু সাধারণ মানুষের কবর। এর অন্যপাশে রয়েছ কিছু
শহীদের কবর। এর ভিতরে উল্লেখযোগ্য শহীদ হলেন- শহীদ ফ্লাইট লেফ্ট্যান্ট মতিয়ুর
রহমান। ত্রিভূজাকার দেয়ালসহ মূল স্মৃতিসৌধ ঘিরে রয়েছে বৃক্ষশোভিত আঙিনা।