দখিগঞ্জ শ্মশান বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের রংপুর শহরের দখিগঞ্জ শ্মশান বধ্যভূমিতে স্থাপিত স্মৃতিস্তম্ভ।

 উল্লেখ্য, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে মার্চ রংপুর শহরের নবাবগঞ্জ বাজারে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ইয়াকুব মাহফুজ আলী। ২৪ মার্চ ১১জন কে অপহরণ করা হয়। এঁরা ছিলেন- মাহফুজ আলী জররেজ, দুর্গাদাস অধিকারী, ক্ষিতীশ হালদার, গোপাল চন্দ্র, এহসানুল হক দুলাল, তোফাজ্জল হোসেন মহরম, রফিকুল ইসলাম রফিক, উত্তম কুমার অধিকারী (গোপাল) এবং অজ্ঞাত আরো ২ জন। এই অপহরণের সাথে জড়িত ছিল জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল। এরপর এদেরকে তুলে দেওয়া পাক-বাহিনীর হাতে।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা এপ্রিল, শনিবার, পাকসেনারা এই ১১ জনকে দখিগঞ্জ শ্মশানে এনে গুলি করে। এই সময় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তাজহাটের দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক (মন্টু ডাক্তার)। দশ জনের লাশের সাথে তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মরার মতো পড়ে থাকেন। পাকসেনারা সবাইকে মৃত মনে করে চলে গেলে, দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় শচীন ডাক্তারের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তিনি ভারতে চলে যান এবং স্বাধীনতার পরে দেশে ফিরে আসেন।

এই দশজন শহিদের স্মরণে  দখিগঞ্জ শ্মশানের বধ্যভূমিতে এই স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্মাধীনতার পর দীর্ঘদিন, স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্তে এখানে কোনো স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয় নি।

প্রথমে এখানে একটি ফলকে শহিদের নামাঙ্কিত স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে সরকারিভাবে এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে মে মাসে ৪ শতাংশ জমির ওপর সাত লাখ টাকা ব্যয় করে স্মৃতিস্তম্ভটির অংশবিশেষ নির্মাণ করা হয়। পরে এই সৌধের কাজ শেষ করা হয়।