কামালপুর স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের জামালপুর বকশীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর স্বাস্থকেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে এই স্মৃতিসৌধ অবস্থিত।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় কামালপুরে ছিল পাকবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। ৩১ জুলাই ১১নং সেক্টরের প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বাটালিয়নের যোদ্ধারা কামালপুর আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ বীর উত্তম শাহাদৎ বরণ করেন। ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ শহিদ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৪ নভেম্বর পাক-বাহিনীর ধানুয়া কামালপুর ঘাঁটি অবরোধ করেন। অবরোধের প্রথম দিনই কামালপুর মির্ধা পাড়া মোড়ে সম্মুখ যুদ্ধে মর্টার শেলের আঘাতে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহের একটি পা হারান। পরে ভারপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব নেন উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান বীরপ্রতীক। ১০ দিন প্রচণ্ড যুদ্ধের পর ৪ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় সেক্টর কমান্ডারের নিদের্শক্রমে বশির আহমেদ (বীরপ্রতীক) নিজের জীবন বাজি রেখে পাক-ক্যাম্পে সারেন্ডার পত্র নিয়ে যাওয়ার পর, সন্ধ্যা ৭টায় ৩১ বালুচ রেজিমেন্টের গ্যারিসন কমান্ডার আহসান মালিক সহ ১৬২ জন হানাদার বাহিনীর সদস্য মিত্র বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে।

ধানুয়া কামালপুর যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ (বীর উত্তম), মুক্তিযোদ্ধা গাজী আহাদুজ্জামান, তসলিমসহ শহিদ হন ১৯৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। গুলিবিদ্ধ হন ক্যাপ্টেন হাফিজ সহ অনেকেই। অন্যদিকে একজন ক্যাপ্টেনসহ হানাদার বাহিনীর ২২০ জন সৈন্য মারা যায় এ যুদ্ধে। ধানুয়া কামালপুর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ২৯ জনকে তাদের বীরত্বের জন্য বীর বিক্রম, বীরউত্তম ও বীরপ্রতীক খেতাব দেয়া হয়।

স্বাধীনতার পর, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে তৎকালীন বিডিআরের ( বর্তমানে বিজিবি) নিজস্ব অর্থায়নে ধানুয়া কামালপুর স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করেছে।