কুল্লাপাথর সমাধিস্থল
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলারা কসবা উপজেলার একটি ছোটো টিলার উপরে অবস্থিত সমাধিস্থল।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরের আওতাধীন ছিল এই উপজেলা। এর পাশে ভারতের আগরতলায় ছিল মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবির। এই কারণে এ অঞ্চলটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্যতম আক্রমণস্থলে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এই সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম এবং তার আত্নীয়রা মিলে তার পৈতৃক ভিটায় মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ সংগ্রহ করে দাফন করেন।

যুদ্ধকালীন সময়ে এখানে ৫০জন শহিদ মুক্তিযোদ্ধাকে সমাধিস্থ করা হয়। এঁদের ভিতরে ছিলেন দুজন বীরবিক্রম, একজন বীরউত্তম, দুজন বীরপ্রতীক এবং অন্যান্য সহযোদ্ধা। এখানকার প্রতিটি কবরের উপরেই মুক্তিযোদ্ধার নাম এবং ঠিকানা লেখা রয়েছে। এছাড়া এই সমাধিস্থলের প্রবেশপথে রয়েছে তালিকা। এদের ভিতরে তিনজনের পরিচয় জানা যায় নি। এই শহিদরা হলেন- -সিপাহী দর্শন আলী, মোঃ জাকির হোসেন, আবদুল জব্বার, হাবিলদার তৈয়ব আলী, নায়েক আবদুস সাত্তার, সিপাহী আব্বাস আলী, মোঃ ফারুক আহাম্মদ, মোঃ ফখরুল আলম, মোজাহদী নূর মিয়া, নায়েক মোজাম্মেল হক, নায়েব সুবেদার মোঃ আবদুর সালাম, নোয়াব আলী, সিপাহী মোসলেম মৃধা, প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, মোঃ আবদুল ওদুদ, সিপাহী আজিম উদ্দিন, মতিউর রহমান, মোশারফ হোসেন, নায়েব সুবেদার মাইনুল ইসলাম, সিপাহী নূরুল হক, মোঃ আবদুল কাইয়ুম, সিপাহী হুমায়ুন কবির, ল্যান্স নায়েক মোঃ আবদুল খালেক, ল্যান্স নায়েক আজিজুর রহমান, মোঃ তারু মিয়া, নায়েক সুবেদার বেলায়েত হোসেন, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ মোরশেদ মিয়া, শ্রী আশোতোষ রঞ্জন দে, মোঃ তাজুল ইসলাম, মোঃ শওকত, মোঃ আবদুস সালাম সরকার, মোঃ জাহাঙ্গীর, আমীর হোসেন, শ্রী পরেশ চন্দ্র মল্লিক, মোঃ জামাল উদ্দিন, মোঃ আবদুল আওয়াল, মোঃ আবেদ আহাম্মেদ, মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ ফরিদ মিয়া, মোঃ মতিউর রহমান, মোঃ সাকিব মিয়া, মোঃ আবদুর রশীদ, আনসার এলাহী বক্স, সিপাহী শাহিদুল হক, সিপাহী আনোয়ার হোসেন, মোঃ আবদুল বারী, অজ্ঞাত, অজ্ঞাত ও অজ্ঞাত।

১৯৭২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা প্রশাসক ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় এ স্থানটি সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়াও রেস্ট হাউস,তোরণ এবং পুকুরের পাকা ঘাট নির্মাণ করা হয়।
২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ অক্টোবর, এর সংস্কার করা হয়। সংস্কারকৃত সমাধিস্থলটির উদ্বোধন করেছিলেন 'মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়'-এর প্রতিমন্ত্রী "ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম (অব.)"।