মুক্ত বাংলা
বাংলাদেশের
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ডানদিকে এবং
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের পূর্ব পাশে অবস্থিত। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই
ডিসেম্বর এই স্মৃতি ভাস্কর্যটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন ভিসি প্রফেসর
ড. মুহাম্মদ ইনাম-উল-হক। ভাস্কর্যের স্থাপত্য ও নকশা শিল্পী তৈরি করেছেন প্রখ্যাত
ভাস্কর রশীদ আহমেদ।
ভাস্কর্যটি ইসলামিক স্থাপত্যরীতিতে গুম্বুজাকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুজিবনগরে গঠিত সাত সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রীসভা স্মরণে
এই স্মৃতি ভাস্কর্যের গুম্বুজটিতে সাতটি স্তম্ভ রাখা হয়েছে । স্তম্ভের উপর মুক্তিযুদ্ধের
হাতিয়ার একটি দৃঢ় মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে ধরা রাইফেল। গম্বুজের উপরে রয়েছে সাতটি লাল রঙের
উদীয়মান সূর্য। এর বেদীমূলটি নীল রঙের টাইলস দিয়ে আবরিত। এখানে নীল রঙকে শান্তির
প্রতীক হিসেবে রাখা হয়েছ। বেদীর উপর থেকে দ্বিতীয় ধাপে কালো পাথর বসানো। যা
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন মহান আত্মত্যাগ নির্দেশ করে। সন্ধি ও যোগাযোগ বুঝাতে
তৃতীয় ধাপে সাদা পাথর বসানো। চতুর্থ ধাপের লাল সিরামিক ইট আন্দোলন ও যুদ্ধ বুঝায়।
লাগাতার আন্দোলন বুঝাতে বেদীর সর্বনিম্নে বিস্তৃত লাল বড় ইট বসানো রয়েছে। যেহেতু
বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে বাংলাদেশ শত্রু মুক্ত হয়েছিল তাই ভাস্কর্যটির নাম রাখা
হয়েছে ‘মুক্ত বাংলা’।
উল্লেখ্য, ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি ভাস্কর্য থাকবে যা ঐতিহাসিক
মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করিয়ে দেবে এমন দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের দীর্ঘদিনের।
তবে এতে বাধ সাধে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন মৌলবাদী শিক্ষক ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা। এ
কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো
পদক্ষেপ নিতে পারে নি। অবশেষে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়
পরিবারের তথা কর্মরত মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সে আশা একদিন পূরণ হয়।