নিশবেতগঞ্জ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের রংপুর-বদরগঞ্জ সড়কের কাছে স্থাপিত স্মৃতিসৌধ। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাওকারী জনতা এবং এই স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এই স্মৃতিসৌধটি স্থাপন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ দিবাগতরাত্রে অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে পাকিস্তানী বাহিনী গণহত্যা শুরু করে। এরই প্রতিক্রয়ায় ২৮শে মার্য রংপুরের সকল স্তরের মানুষম একতাবদ্ধ হয়ে দা, বটি, কুড়াল, তীর, ধনুকসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাক-বাহিনীর ২৩তম বিগ্রেডের সদর দফতর রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করে। এ সময় এই ক্যান্টমেন্ট ছিল বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ মালিক।

২৮শে মার্চ প্রায় ৩০ হাজার বাঙালি এবং আদিবাসীরা দেশী ধারালো অস্ত্র, তীর-ধনুক সহযোগে ক্যান্টনমেন্টের দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে অগ্রসর হয়। এদের প্রতিরোধ করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনী এদের উপর গুলিবর্ষণ করে। ফলে প্রায়  ৬ শতাধিক লোক হতাহত হন।

এর নকশা তৈরি করেছিলেন শিল্পী মুস্তাসিন এম খান। এই নকশায় তীর-ধনুক এবং দেশীয় অস্ত্রের প্রতীকের মধ্য দিয়ে যুদ্ধকে উপস্থাপন করা হয়েছে। এর দণ্ডাকার অংশের উচ্চতা ৩০ ফুট। এর বেদীকে ঘিরে রয়েছে সমকেন্দ্রিক বৃত্তাকার খণ্ডিত অনুচ্চ দেয়াল।

২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই ফেব্রুয়ারি (৫ ফাল্গুন ১৪০৬ বঙ্গাব্দ), এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন লেঃ জেনারেল মুহাম্মদ মস্তাফিজুর রহমান (বীরবিক্রম, এনডিস, পিএসসি.সি)। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের শেষার্ধে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল। এই বছরের ২১ নভেম্বর (৭ অগ্রহায়ণ ১৪০৯ বঙ্গাব্দ) এর শুভ উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন এরিয়া কমান্ডার রংপুর অঞ্চল ও ৬৬ পদাতিক ডিভিসনের জিওসি মেজর জেনারেল আ ত ম জহিরুল ইসলাম (পিএসসি)।