স্বোপার্জিত স্বাধীনতা
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সড়কদ্বীপে অবস্থিত
বাংলাদেশের স্বাধীনতা'র স্মারক ভাস্কর্য।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চের
রাত প্রায় ১২টার পর থেকে নিরস্ত্র বাঙালির উপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিষ্ঠুর
হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময় সাধারণ মানুষ এবং বাঙালি
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রক্তক্ষয়ী এই স্বাধীনতা
যুদ্ধের স্মরণে এই ভাস্কর্যটি স্থাপিত হয়েছে। ভাস্কর্যটি মাটি থেকে ১৩ ফুট উচ্চ, ৮
ফুট ৪ ইঞ্চি প্রস্থ এবং ১২ ফুট ৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য একটি বেদীর উপরে স্থাপিত হয়েছে।
এই ভাস্কর্যের গা-জুড়ে রয়েছে একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদারদের অত্যাচাররে
কয়েকটি খণ্ডচিত্র। বেদির ওপর মূল ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। ওপরে বামে আছে
মুক্তিযোদ্ধা কৃষক আর ডানে অস্ত্র হাতে দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা। মাঝখানে অস্ত্র হাতে
নারী ও পুরুষ যোদ্ধারা উড়িয়েছে বিজয় নিশান। এ ভাস্কর্য বেদির বাম পাশে আছে
ছাত্র-জনতার ওপর অত্যাচারের নির্মম চেহারা।
এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন শামীম শিকদার। ভাস্কর্য কর্মে সহায়তা করেন
হিমাংশু রায় ও আনোয়ার চৌধুরী। ভাস্কর্যটি নির্মাণে সিমেন্ট, বালু, রড, পাথর ব্যবহার
করা হয়েছে। এর নির্মাণ ব্যয়ে সহায়তা করেন তকদীর হোসেন জসীম। ভাস্কর শামীম শিকদারও
ব্যক্তিগতভাবে স্বোপার্জিত স্বাধীনতার নির্মাণে প্রয়োজনীয় অর্থ যোগান দেন। তবে
নির্মাণ সামগ্রীর কিছু উপকরণ সরবরাহ করেছিলেন ঠিকাদার ফিরোজ।
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫
মার্চ তারিখে, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক এ ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষিকা অধ্যাপিকা শামীম সিকদার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ জাতির সকল আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের
এসব গৌরবোজ্জ্বল অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যটি
শিল্পী এ বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎসর্গ করেছেন।