সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার
সিলেট জেলা সদরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছিল ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর।
মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ইয়ামিন চৌধুরী বীরবিক্রম, ইফতেখার হোসেন শামীম, ছদরউদ্দিন
চৌধুরী ও মো. শওকত আলীর উদ্যোগে ও কিছু প্রতিশ্রতিশীল মানুষের উদ্যোগে এই শহিদ মিনারটি
তৈরি করা হয়েছিল। সে সময়ে এই শহিদ মিনারটি তৈরি করা হয়েছিল ১৭ শতাংশ জায়গার উপর।
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের
২২শে ফেব্রুয়ারি হেফাজতে ইসলামের মিছিল থেকে এই শহিদ মিনারে হামলা চালিয়ে প্রায়
ধ্বংস করে ফেলা হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে নতুন
করে শহিদ মিনার স্থাপন করেন ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে।
একই বছর ৭ সেপ্টেম্বর শহিদ মিনারটির আনুষ্ঠানিক
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উল্লেখ্য, এই শহিদ
মিনারটি তৈরিতে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল।
বর্তমান শহিদ মিনারটির নকশা করেছেন শুভজিৎ
চৌধুরী। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন স্থপতি কৌশিক সাহা, সিপাউল বর চৌধুরী,
ধীমান চন্দ্র বিশ্বাস ও জিষু কুমার দাস।
প্রায় ৩৩ শতাংশ জায়গা জুড়ে এই মিনারটির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮ শতাংশ জায়গার মধ্যে শহিদ মিনার স্থাপিত
হয়েছে। সমতল ভূমি থেকে ১শ’ ফুট চওড়া আন্দোলিত ভূমি তৈরি করা হয়েছে। এই
আন্দোলিত ভূমির উপর শহিদ মিনারটি স্থাপন করা হয়েছে তিনটি ভিন্ন ধরণের স্তম্ভ।
প্রথাগত শহিদ মিনারের নকশার চেয়ে বেশ অন্যরকম। স্তম্ভগুলো কংক্রিট দিয়ে তৈরি
করে এর ওপর শ্বেতপাথর বসানো হয়েছে। মাঝের স্তম্ভে বসানো হয়েছে রক্তিম সূর্য।
সূর্যোদয়ের মাধ্যমে নতুন দিনের কথা জানাতে মাঝের স্তম্ভে একটি সূর্য প্রতীক স্থাপন করা হয়েছে। লাল রঙের এই সূর্যের ব্যাস সাড়ে পাঁচ ফুট। মাঝের স্তম্ভের ডানে-বাঁয়ে যে দুটি স্তম্ভ রয়েছে, সেগুলোতে
জানালার মতো চারটি অংশ রয়েছে। এসব জানালায় বাঙালির মুক্ত জীবনকে প্রতীকীভাবে
উপস্থাপন করা হয়।
শহিদ মিনারের ডান
দিকে মাটির নিচে তিন হাজার স্কয়ার ফুটের একটি সংগ্রহশালা রয়েছে। এখানে ভাষা আন্দোলন
ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক, স্মৃতিচিহ্ন, বই ও আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হবে।