ইদ্রাকপুর পরগনা
বাংলাদেশের বিলুপ্ত একটি বিশাল প্রশাসনিক এলাকার নাম।

এই পরগনার সদর দপ্তর ছিল গোবিন্দগঞ্জের বর্ধনকুঠিতে। চতুর্দশ শতকের গোড়ার দিকে রাজা নারায়ণ ছিলেন দেববংশীয় এবং বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশের জমিদার বংশের লোক। রংপুরের কালেকটর গুডল্যাড সাহেবের ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দে ইদ্রাকপুর সম্পর্কিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, রাজেন্দ্র নারায়ণ থেকে আর্যাবর পর্যন্ত ১৪জন জমিদার বা রাজা বর্ধনকূঠির শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। তারপর আর্যাবরের পুত্র রাজা ভগবান এবং তার পুত্র রাজা মনোহর বর্ধন কুঠিয় দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।  রাজা মনোহন নাবালক পুত্র রঘুনাথকে রেখে মৃত্যূবরণ  করলে বাংলার সুরেদার শাহ সুজার আমলে মধুসিংহ নামে পার্শ্ববতী এক জমিদার বর্ধনকুঠির পাচঁ আনা অংশ দখল করে নেন। পরে ১৬৬৯ খ্রিষ্টাব্দে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব মধুসিংহকে উচ্ছেদ করে রঘুনাথকে জমিদারী ফরমান দেন। আওরঙ্গজেবের এই সনদ মোতাবেক রংপুর মাহীগঞ্জ, স্বরূপপুর (রংপুর-সৈয়দপুরের মধ্যবর্তী স্থান) এবং দিনাজপুর  জেলার পলাদশী নামের পরগনা গোবিন্দগঞ্জের এই বর্ধনকূঠির আওতায় আসে। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ইতিহাস খ্যাত বর্ধনকুঠির সর্বশেষ রাজা শৈলেশ চন্দ্র ভারতে চলে যান। বর্ধন কূঠিরে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রক্তসাগর, দূধসাগর, সরোবর নামের বিশাল ধ্বংসাবশেষ, গোবিন্দগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ এলাকায় এখনও বিদ্যমান রয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের অভাবে এবং কলেজ কতৃক ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ বিনষ্ট করে নতুন ভবন নির্মাণ করায় অতীতের স্মৃতির ঐতিহাসিক চিহ্ন সমূহ এখন বিলুপ্ত প্রায়। প্রশাসনিকভাবে এই পরগনার অস্তিত্ব নেই।

 


সূত্র :
http://www.gaibandha.gov.bd/node/106941