কান্তজীর মন্দির
শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্য নিবেদিত একটি মন্দির।
অন্যনাম :
কান্তজীউ মন্দির,
কান্তনগর মন্দির, নবরত্ন মন্দির।
শ্রীকৃষ্ণের মন্দির, এই অর্থে একে বলা হয় কান্তজীউ বা কান্তজীর মন্দির। এই মন্দিরের
কারণে এই স্থান কান্তনগর নামে পরিচিত হয়ে উঠে। এই কারণে পরে এই মন্দিরটি হয়ে উঠে
কান্তনগরের মন্দির। এই মন্দিরের উপরে নয়টি চূড়া বা শিখর ছিল বলে একে নবরত্ন মন্দির
বলা হতো।
বাংলাদেশের দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে এবং কাহারোল উপজেলা সদর থেকে সাত
কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে সুন্দরপুর ইউনিয়নে, দিনাজপুর-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের
পশ্চিমে ঢেঁপা নদীর তীরে এই মন্দিরটি অবস্থিত।
মন্দিরের
উত্তর দিকের ভিত্তিবেদীর শিলালিপি থেকে জানা যায়, তৎকালীন দিনাজপুরের মহারাজা
জমিদার প্রাণনাথ রায় তাঁর শেষ বয়সে মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭২২
খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর পোষ্যপুত্র মহারাজা
রামনাথ রায় ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। এই মন্দিরের
চূঁড়ার উচ্চতা ছিলো ৭০ ফুট। ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ভূমিকম্পে এর চূঁড়াগুলো ভেঙে যায়।
মহারাজা গিরিজানাথ মন্দিরের ব্যাপক সংস্কার করলেও মন্দিরের চূড়াগুলো আর সংস্কার
করা হয়নি। এই মন্দিরের উপরে নয়টি চূড়া বা শিখর ছিল বলে একে নবরত্ন মন্দির বলা হয়।
৫০ফুট উচ্চতার এই মন্দিরটি বর্গাকার এবং পাথরের ভিত্তির উপরে দণ্ডায়মান। মন্দিরটির
প্রাঙ্গণ আয়তাকার। উপরের দিকে তিন ধাপে উঠে গেছে মন্দিরটি। নিচতলার সব প্রবেশপথে
বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে। দুটো ইটের স্তম্ভ দিয়ে খিলানগুলো আলাদা করা হয়েছে।
মন্দিরের নিচতলায় ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭টি দরজা-খিলান রয়েছে, তবে তৃতীয়
তলায় রয়েছে মাত্র ৩টি করে। পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫,০০০-এর মতো
টেরাকোটা রয়েছে।
এসব
টেরাকোটায় রামায়ণ, মহাভারত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি চিত্রিত আছে। মন্দিরের
চারদিকের সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়। মন্দিরের পশ্চিম দিকের
দ্বিতীয় বারান্দা থেকে সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গেছে।
ধারণা করা হয় দিনাজপুরের
গঙ্গারামপুরের নিকটবর্তী বাননগরের একটি ধ্বংসাবশেষ থেকে এই মন্দিরের উপকরণ সংগ্রহ
করা হয়েছিল।
সূত্র :