দয়া নদী
বাংলাদেশের উত্তরঙ্গের একটি বিলুপ্ত নদী।
এটি পদ্মার স্বরমঙ্গলা নামক নদীর শাখা নদী থেকে উৎপন্ন হয়েছে। স্বরমঙ্গলা নদীটি রাজশাহী শহরের কাজলা-জামালপুর ও নামভদ্রা
এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে, জামালপুর মৌজার রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি
বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ক্যাম্পাসের উত্তর-পূর্ব অংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। রুয়েট
ক্যাম্পাসের প্রবেশের ২০-২৫ গজ পূর্বেই স্বরমঙ্গলা থেকে দয়া নামক শাখা নদীর জন্ম
হয়। এই নদীটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম দেয়াল বরাবর উত্তর দিকে বয়ে গেছে।
এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম দেয়ালের পাশে তাকালে নদীর রেখা বোঝা যায়। রেললাইনের
উত্তর পাশে দয়া নদীর খাতটি এখনো বেশ স্পষ্ট। সমতল থেকে প্রায় চার ফুট গভীর ও প্রায়
২৫ গজ প্রশস্ত এই জলাভূমিতে বছরের ছয় মাস পানি থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ
সম্প্রতি খনন করে এটি একটি পুকুরের আকৃতি তৈরি করেছে। নদীটি রাজশাহীর মেহেরচণ্ডি,
খড়খড়ি বাজার, বামন শিকড়, মল্লিকপুর, তেবাড়িয়া, সারাংপুর হয়ে ঘোলহারিয়া গ্রামে এসে
পুনরায় স্বরমঙ্গলার সঙ্গে মিলিত হয়ে সম্মিলিত প্রবাহ ফলিয়ার বিলে পতিত হয়। এই বিল
থকে দয়া এবং স্বরমঙ্গলার মিলিত স্রোত হোজা নদী নামে প্রবাহিত হয়েছে। পরে নদীটি
রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার পলাশবাড়ী গ্রামের মধ্যদিয়ে পূর্বমুখী প্রবাহ পথে তিন
কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। এরপর উত্তরমুখী হয়ে বর্ধনপুর, চৌপুকুরিয়া, সিঙ্গা,
দুর্গাপুর, পনানগর, দমদমা, চকপলাশী, গাংধোপাপাড়া, গন্ডগোহালি, গোবিন্দনগর হয়ে
পুঠিয়ার কানাইপাড়ার মধ্যদিয়ে মুসা খান নদীতে পতিত হয়েছে।
দমদমা ছিল সুলতানী আমলের একটি উল্লেখযোগ্য প্রশাসনিক কেন্দ্র। গোবিন্দনগরে ছিল শ্মশানঘাট। স্থানীয় লোকেরা এখনো মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করলেই শ্মশানের পোড়া কয়লার সন্ধান পেয়ে থাকেন। গাঙধোপাপাড়ার নামটিই নদীর পরিচয় বহন করে। অথচ নতুন প্রজন্মের কেউ জানেন না যে এই নয় কিলোমিটার এলাকায় নদী ছিল।