মৌলানা আজাদ কলেজ
(পূর্ব নাম ইসলামিয়া কলেজ, মধ্য কলকাতা কলেজ)
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত মধ্য কলকাতার একটি কলেজ।

১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই ডিসেম্বর, তৎকালীন বাংলার গভর্নর ভিক্টর বুলওয়ার-লিটন, সেকেন্ড আর্ল অফ লিটন মুসলমানদের জন্য, কলকাতার ওয়েলেসলি স্কয়ারের এই কলেজটি স্থাপন করেছিলেন। তখন কলেজটির নাম ছিল ইসলামিয়া কলেজ। এই কলেজ ক্যাম্পাসের জন্য হাজি মহম্মদ মহসিন জমি দান করেছিলেন। সে সময়ে কলেজের ছাত্রদের অধিকাংশই ছিল কলকাতার উর্দুভাষী ও বাঙালি মুসলমান ছাত্র।

১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই কলেজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন মধ্য কলকাতা কলেজ। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আজাদের নামানুসারে, এই কলেজের নামকরণ করা হয়- মৌলানা আজাদ কলেজ। বর্তমানে এই কলেজে সকল সম্প্রদায়ের মানুষই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।

উল্লেখ্য ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান,   প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে এই এই কলেজের মানবিক বিভাগে আই.এ. ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন। এই সময় তিনি মধ্য কলকাতার তালতলার স্মিথ লেনে অবস্থিত সরকারি বেকার হোস্টেলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। তাঁর কক্ষটি ছিল তিনতলায়, এর নম্বর ছিল ২৪।

১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে এই কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসে অনার্সসহ ব্যাচেলার ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চশিক্ষা বিভাগ এই বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষটিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ হিসেবে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করে। ওই বছর ৩১শে জুলাই উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক সত্য সাধন চক্রবর্তী, কলজের অধ্যক্ষ ড. সত্যব্রত ভট্টাচার্য এবং কলকাতার বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত শেখ আহমেদ জালাল স্মৃতি কক্ষের নামফলক উন্মোচন করেন।

এরপর এই কক্ষের প্রবেশ পথের মুখে সাদা মার্বেল পাথরের
বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে ফেব্রুয়ারি এই ভাস্কর্যের ফলক উন্মোচন করেছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকক্ষ ও সংগ্রহশালার জন্য, এই কক্ষের সাথে যুক্ত করা হয়েছে, ২৩ নম্বর কক্ষ। ২৪ নম্বর কক্ষে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর পড়ার চেয়ার-টেবিল, একটি কাঠের আলমারি ও খাট এবং ২৩ নম্বর কক্ষে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর একটি আলোকচিত্র আর বেশ কিছু বই-পুস্তক।

এছাড়া বেকার হোস্টেলের পাঁচতলা নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এটির নাম রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ভবন।’